দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কালো প্লাস্টিকে মোড়ানো ছিল। হাতে ঝুলছিল প্যাকেট। মাংসের টুকরো উঁকি মারছিল প্যাকেট থেকে। মাংস নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন দুই বন্ধু। কষা মাংস আর রুটি। কিন্তু রাস্তার মাঝেই পিছন থেকে এসে এক খপ্ করে হাত ধরলেন এক জন। দুই বন্ধুর বুক ধরপড়! কারণ নিজেদের ভুল তো তাঁরা জানেন! মাংসের প্যাকেট খুলতে বলতেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ধরা পড়ে গেল। হরিণের মাংস-সহ দু’জনকে হাতেনাতে ধরলেন বনকর্মীরা। ধৃত উদয় সরকার ও সুলেখা গিরি নামখানার হরিপুর এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে এক কেজি করে মোট দু’কেজি হরিণের মাংস বাজেয়াপ্ত করেছে সুন্দরবনের রামগঙ্গা রেঞ্জ অফিসের অধীন ভগবতপুর বিট অফিসের বনকর্মীরা।
ধৃতরা হরিণের মাংস খাওয়ার জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছিল বলে জেরায় স্বীকার করেছে বলে দাবি বনকর্মীদের। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পিছু নেন বনদফতরের কর্মীরা। পরে নামখানার দক্ষিণ চন্দন পিড়ি এলাকা থেকে দু’জন হরিণের মাংস-সহ হাতেনাতে ধরা হয় বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে বনদফতর। বাজেয়াপ্ত মাংস ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার ধৃতদের কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হলে উদয় সরকারের পুলিশ হেফাজত এবং সুলেখা গিরির জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বনদফতর সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন আগে পাথর প্রতিমার ভগবতপুর এলাকা সংলগ্ন সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছিল বেশ কয়েকটি হরিণ ধরার ফাঁদ। সেই ফাঁদ উদ্ধারের পর বনকর্মীরা তল্লাশি চালায়। কোনওভাবে চোরা শিকারীদের ধরতে না পারলেও তখন থেকেই সুন্দরবনের জঙ্গলে বেআইনিভাবে হরিণ শিকার চক্রের সক্রিয় হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছিল। এবার হরিণের মাংস-সহ দু’জন ধরা পড়ায় হরিণ শিকার চক্রের সক্রিয় থাকার বিষয়টি আরও জোরাল হল। ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের বাকিদের পাশাপাশি চোরা শিকারিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।