সুন্দরবন: বর্ষার সময় নদীতে জল বাড়ে। ফলে ভাসিয়ে নেয় একের পর এক বাড়ি। ভেঙে যায় বাঁধ। কিন্তু শীতকালে? বিশেষ করে এই মরশুমে তো সেই অর্থে বৃষ্টি হয়নি। তারপরও সুন্দরবনে কংক্রিটের তৈরি বাঁধ চলে গিয়েছে নদী গর্ভে। যার জেরে বাড়ছে আতঙ্ক। তবে কি বড়সড় কোনও বিপদ আসছে সুন্দরবনে?
ভারতীয় সুন্দরবন এলাকায় অন্যতম বড় নদী হিসেবে পরিচিত রায় মঙ্গল। আর সেই রায়মঙ্গলের পাশেই রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাংলাদেশের দিকের শেষ জনপদ অর্থাৎ গোসাবা ব্লকের শেষ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কুমিরমারি। সেই কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগনা গ্রাম যেখানে রয়েছে বিএসএফের ক্যাম্প অফিস, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিট অফিস সহ আস্ত একটি গ্রাম। সেখানকার মানুষের সামনে এখন একটাই বড় ভয়ংকর বিপদ সেটি হলো রায়মঙ্গলের আগ্রাসী রূপ। আস্তে আস্তে সেই গ্রামের নদী বাঁধ তলিয়ে যাচ্ছে রায়মঙ্গল এর নদী গর্ভে।
উল্লেখ্য এখানে মাটির নদী বাঁধ ভাঙছে না। ভাঙছে মাটির নদী বাঁধের বদলে তৈরি করা কংক্রিটের বাঁধটি ।যে নদী বাঁধকে সুন্দরবনবাসীরা নদী ভাঙনের অন্যতম সমাধান বলে মনে করেন। আর এখানেই প্রশ্ন যদি কংক্রিটের নদী বাঁধই এই ভাবে ভেঙে তলিয়ে যায় তাহলে কিভাবে সুন্দরবনের নদী ভাঙন রোধ করা যাবে? বিশেষ করে কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাগনার পাশাপাশি ভাঙ্গনঘাট,বুধবারের বাজারলাগোয়া আদিবাসী পাড়া, বনবিবিতলা সহ একাধিক জায়গায় ভাঙন কবলিত এলাকায় হিসেবেই পরিচিত।
কিন্তু বাগনা এলাকার ভাঙন যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে এলাকার মানুষদের। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রায়মঙ্গল নদী হয়ে বাংলাদেশের সমস্ত পণ্যবাহী জাহাজ যাতায়াত করে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে। এর দরুণ নদীর জলের অতিরিক্ত কম্পন হয়। সেই কম্পন বাঁধে আঘাত করে। তার ফলেই ভাঙছে শক্তপোক্ত ঢালাই নদী বাঁধ। গ্রামবাসী তুলসী দাস বলেন, “বাঁধ ভাঙছে। ভয়ে আছি। ঘর বাড়ি তলিয়ে নেবে। নোনা জল ঢুকে শস্যের ক্ষতি করে। সবাই এসে বাঁধ দেখে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।”