দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পরিসংখ্যান বলছে প্রায় ‘ভাঁড়ে মা ভিবানী’। তার উপর ‘নিরুদ্দেশ’ এক শিক্ষিকা। মাস যায়, বছর যায় তিনি নাকি স্কুলেও আসেন না। চার বছর একই অবস্থা। ওই শিক্ষিকা তোলেন না বেতনও। এমনই উদ্ভট সমস্যায় বিপাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষিকার এহেন অদ্ভুত অবস্থানে যেন মাথার চুল ছাড়ার উপক্রম প্রধান শিক্ষকের। দু’বার রিমাইন্ডার লেটার দিয়েও ধরা যায়নি তাঁকে।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের। ২০১৪ সালে ওই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের স্থায়ী শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন শ্রীতমা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম থেকেই তিনি অনিয়মিত স্কুলে আসছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের পর থেকে পাকাপাকি বন্ধ করে দেন স্কুলে আসা। বর্তমানে অনেক ছাত্রছাত্রী কার্যত চেনেই না তাঁকে। তবে শ্রীতমাদেবী স্কুল বন্ধের আগে অবশ্য নো ওয়ার্ক নো পে-র জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়েছিল। স্কুলে আসা বন্ধ হয় তারপর। দু’বছর এভাবে চলার পর হঠাৎ একদিন স্কুলে টেলিফোন করে ওই শিক্ষিকা একটি এনওসি দেওয়ার আবেদন করেন। তারপর ফের সব চুমচাপ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জ্যোতিষচন্দ্র সরকার জানান, দু’বার রিমাইন্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উত্তর দেননি শ্রীতমা। তাই বাধ্য হয়ে গোটা বিষয়টি জানাতে হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনে। এরপর কমিশন থেকে রিলিজ অর্ডার চলে আসে স্কুলে। কিন্তু সেই অর্ডার নেবে কে? ওই শিক্ষিকা সাড়া দেননি এতেও। আর এমন অবস্থায় সমস্যার মুখে আস্ত স্কুলটাই।’
কর্তৃপক্ষের দেওয়া হিসাব বলছে, বর্তমানে জি-প্লট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ১ হাজার ৪০০। সবকটি শ্রেণি মিলিয়ে রয়েছে ১৯টি সেকশান। শিক্ষা দফতর অনুমোদিত শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকা উচিত ৩৭ জন। কিন্তু নিয়োগ না থাকায় বর্তমান সংখ্যা ঠেকেছে ১৫। ফলে ক্লাস নেওয়ার লোক খুঁজতেই মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। সমস্যা বাড়িয়েছে এই শিক্ষিকার রহস্যময় লুকোচুরি। একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন স্তরে জানিয়েও কোনও ফল পাচ্ছেন না। ফলে অথৈজলে স্কুলটি।