বজবজ: ভরদুপুরে বজবজে (Budge Budge) চলল গুলি। শাশুড়ির সামনেই গুলি করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করল জামাই। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে বজবজ পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওরিয়েন্ট এলাকায়। গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম শুভ সামন্ত (৩০)। পেশায় গাড়ি চালক। সূত্রের খবর, কিছু বছর আগে ওরিয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা পূজার সঙ্গে বিবাহ হয় শুভ সামন্তের। বিয়ের পর সব ঠিকঠাই ছিল। বিয়ের পর তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও হয়। শুভর শাশুড়ির অভিযোগ কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু হয়। প্রায়শই বাড়িতে পূজার সঙ্গে ঝামেলা করত শুভ।
শুভর শাশুড়ির দাবি কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে তাঁর মেয়েকে দোষারোপ করত শুভ। ঝগড়া থামাতে প্রায়শই ছুটে যেত হত তাঁদের। সূত্রের খবর, এদিন সকালেও ফের অশান্তি হয় শুভর বাড়িতে। সকালেই নিজের কন্যা সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যায় শুভ। কবে দুপুর হতেই ফের ফিরে আসে সেখানে। নিয়ে যেতে চায় মেয়েকে। কিন্তু, নাতনিকে ফেরাতে চাননি শুভর শাশুড়ি। দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময়ও হয়। তখনই শ্বশুরবাড়ির কাছে থাকা একটি মন্দিরের সামনে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে দেয় শুভ। এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁর শাশুড়ি। ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয় গোটা এলাকায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বজবজ থানার পুলিশ। বজবজ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী সহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার অর্ক ব্যানার্জি এবং ডিএসপি ইন্ডাস্ট্রিয়াল নিরুপম ঘোষও ঘটনাস্থলে যান। পুলিশই শুভকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে শুভ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বজবজ থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই একটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে শুভর হাতে কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এল তা এখনও পরিষ্কার নয়। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শুভর শাশুড়ি বুল বড়াল বলেন, “তিনবছর আগে বিয়ে হয়। তবে কন্যা সন্তান হয়েছিল বলে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রায়শই ঝামেলা করত। আজও ঝামেলা হয়েছিল। আজ সকাল ১০টা নাগাদ আমার মেয়ে আর ও এসে নাতনিকে এখানে রেখে যায়। তারপর আবার দুপুরে এসে এই কাণ্ড করেছে।” স্থানীয় বাসিন্দা গৌরী বড়াল বলেন, “ঘটনা যখন ঘটে তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। তিনটে-সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকা গুলির আওয়াজ শুনি। চেঁচামেচি শুনে আমি এসে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে রাস্তায়। সবাই বলছে পিস্তল দিয়ে গুলি চালানো হয়েছে। নিজেই করেছে হয়তো। আমি যতদূর জানি ও পুলিশের গাড়ি চালাতো। ওর মেয়েকে নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল। সে কারণেই আজ এখানে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিল। তারপরেই এ ঘটনা ঘটে যায়।”