ভাঙড়: প্রথম দু’দিনে ‘মেগা শো’ দেখিয়ে দিয়েছে ভাঙড়। আজ হয়তো সেই ‘শো’-এর ‘হ্যাট্রিক’ হতে চলেছে। সকাল থেকেই মিলল তার আভাস। গত মঙ্গলবারের পর বৃহস্পতিবার, ভাঙড় (Bhangar) ২ নম্বর ব্লক আরাবুল ইসলামের (Arabul Islam) এলাকায় এদিন ফের মনোনয়ন জমা। আড়ালে অবশ্যই থেকেছেন, কিন্তু মঙ্গলবার সেভাবে ময়দানে নেমে মনোনয়ন পর্ব পরিচালনা করতে দেখা যায়নি আরাবুল ইসলামকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ‘ফর্মে’ দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ দিনও অভিযোগ ওঠে, সকাল ৯টার পর থেকে ভিড় জমতে শুরু করে বিডিও অফিসের বাইরে। মুখে কাপড় বাঁধা এক দল যুবক। এদিন অবশ্য তাঁদের হাতে লাঠি কিংবা বাঁশ দেখা যায়নি। কিন্তু ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিডিও অফিসের সামনে জমায়েত করার অভিযোগ ওঠে। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১১.০৫। বিডিও অফিসের অদূরে প্রথম বোমাটি পড়ে। সেই বোমাবাজির ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে সাংবাদিকরা তখন দৌড়ন। অভিযোগ ওঠে, সেই ফাঁকে বিডিও অফিসের গেট বন্ধ করে এক দল যুবক ঢুকে পড়ে। আর তাদের নেতৃত্বে ছিলেন নাকি স্বয়ং আরাবুল ইসলাম।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রত্যেকের মুখে রুমাল, কাপড়ের টুকরো বাঁধা। শ’ তিনেক যুবক। তাঁদের মাঝেই খুঁজে পাওয়া গেল আরাবুল ইসলামকে। পুলিশ একজন। আর জলপাই রঙের পোশাক পরা একজন। বাকি সবই টিশার্ট আর মুখে রুমাল বাঁধা যুবকের দল। তাঁরাই বিডিও অফিসের গেট বন্ধ করলেন, সাংবাদিকদের ঢুকতে বাধা দিলেন। সামনে তখনও ঠুঁটো পুলিশ। এরপর এক পুলিশ আধিকারিক এসে দরজা খুলে দেন। আরাবুল ইসলাম তখন গেটের ভিতর ঢুকে গিয়েছে। হেঁটে চলে যাচ্ছেন বিডিও অফিসের ভিতর। তাঁকে ঘিরে রেখেছেন অনুগামীরা। অন্তত ক্যামেরার সামনে তাঁরা সেটাই দাবি করেছেন।
ক্যামারায় ধরা পড়ে, ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করেই মুখে গামছা বাঁধা সেই যুবকের দল আরাবুলকে ঘিরে ধরে সিঁড়ি বেয়ে সটান উঠে যেতে থাকেন বিডিও অফিসের অন্দরে। প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনারা কারা?’ পাল্টা তাঁরাই বলেন, ‘আরে মনোনয়নটা জমা দিতে দেবেন তো…’
তারই মাঝেই বিডিও অফিসের কলাপসিবল গেট আটকে দিয়ে ওপর প্রান্ত থেকে সাংবাদিকদের বুম ফোকাস করেই তিনি বলতে থাকেন, “আরে ভাইজানের লোকেরা ওদিক থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে। পুলিশ তো ওদের সামলাতেই ব্যস্ত। যেভাবে ভাইজানরা বোমা-গুলি-বারুদ নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের ওপর নৃশংসভাবে পেটাচ্ছে। তাই আমরা গেট আটকে দিয়েছি।” তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল কর্মীরাই তো আতঙ্কিত, এভাবে মনোনয়ন কীভাবে হবে।” কিন্তু প্রশ্ন তা বলে বিডিও অফিসের ভিতর মুখে কাপড় বাঁধা এত লোক কীসের? তাঁর জবাব, “আরে, আমরা মনোনয়ন জমা করছি তো এখানে।” সাংবাদিকদেরই পাল্টা বলেন, “আপনারা কেন এত বিরক্ত করছেন?”
বিডিও অফিসের ভিতরে তখন শয়ে শয়ে লোক। আরে হাতে গোনা জনা চারেক উর্দিধারী। আর গেটের বাইরে সাংবাদিকরা।