মহেশতলা: যুবতীর বাপের বাড়িতে ফোন আসে এক যুবকের। জানায় গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গুরুতর জখম হয়েছেন তিনি। মেয়ের পরিণতির কথা শুনে তৎক্ষণাত তাঁর বাড়িতে যান পরিবারের সদস্যরা। তবে মেয়ে অবস্থা দেখে শিউরে ওঠেন তাঁরা। তারপর…
ঘটনা প্রবাহ
এই ঘটনার সামগ্রিক তথ্য জানতে পিছিয়ে যেতে হবে একমাস আগে। মহেশতলা থানার বেলেডাঙা এলাকার বাসিন্দা শম্পা মণ্ডল (৩০)। প্রায় ১২ বছর আগে শম্পার সঙ্গে বিয়ে হয় বিকাশ মণ্ডল নামে এক যুবকের।
দম্পতির বছর দশের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন শম্পা।
সেই সময় এলাকার যুবক সোমনাথ রায় নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় গৃহবধূর। পরিবারের দাবি, কয়েকদিন পর শম্পা নিজেরে সন্তানকে ছেড়ে চলে যান সোমনাথের বাড়িতে। অভিযোগ, এরপর একদিন সোমনাথ শম্পার পরিবারের লোকজনদের ফোনে খবর দেন যে, শম্পা আত্মহত্যা করেছেন। সঙ্গে-সঙ্গে বাপের বাড়ির সদস্যরা সেখানে পৌঁছে দেখেন পাখায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় শম্পা ঝুলছে। সেই দিনের ঘটনায় কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
পরবর্তীকালে অর্থাৎ, শুক্রবার সোমনাথ শম্পার দাদাকে ফের ফোন করে দাবি করেন গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা। ফোনে ওই যুবক জানায় গ্যাস সিলিন্ডার বাস্ট করে শম্পা গুরুতর আহত হয়েছেন। তড়িঘড়ি সোমনাথের বাড়িতে হাজির হন যুবতীর পরিবারের লোকজন। তাঁরা গিয়ে বিভৎস অবস্থায় দেখতে পান মহিলাকে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি বাথরুমে পড়ে রয়েছেন শম্পা। তাঁর মুখ এবং শরীরের একাংশ পুড়ে গিয়েছে। এবং জিভ বাইরে বেরিয়ে এসেছে। পরিবারের অভিযোগ, ঘরের অন্যান্য কোন জায়গায় পোড়ার চিহ্ন মেলেনি। এবং সিলিন্ডারও যথাস্থানে অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
এমতাবস্থায় শম্পার বাপের বাড়ির লোকজনের বক্তব্য, এটা দুর্ঘটনা নয় এটা পরিকল্পিতভাবে খুন। এই ঘটনায় সোমনাথের বিরুদ্ধে মহেশতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে শম্পার পরিবারের লোকজন। অভিযুক্ত সোমনাথ রায়কে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে মহেশতলা থানা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমনাথ রায়ের সঙ্গে শম্পার কোনও বিয়ে হয়নি। পরিবারের লোকজন মনে করছেন সম্পত্তির লোভে পরিকল্পনা করে শম্পাকে খুন করা হয়েছে।
শম্পা মণ্ডলের দাদা বলেন, ‘আমায় একটি অন্য নম্বর থেকে ফোন করে জানায় যে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আহত হয়েছে ও। এরপর আমরা যাই সেখানে গিয়ে দেখি সিলিন্ডার একই জায়গায় রয়েছে। বোন বাথরুমে পড়ে রয়েছে। জিভ বেরিয়ে এসেছে। আমরা থানায় খবর দিই। পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমাদের মনে হচ্ছে ওকে সম্পত্তির লোভে খুন করা হয়েছে।’