কুলতলি: ২২ দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন ইমারত ব্যবসায়ী। অবশেষে উদ্ধার হল তাঁর দেহ। গ্রামেরই একটি বাগান থেকে পচাগলা দেহটি উদ্ধার করেছে কুলতলি থানার পুলিশ। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন স্থানীয় এক যুবক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার প্রাণকেন্দ্র জামতলার বাসিন্দা শ্যামাপদ কয়াল। এলাকায় তিনি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত। তাঁর বড় ছেলে বিজয়কৃষ্ণ কয়াল (৩৩)। মে মাসের ১৭ তারিখ সন্ধ্যার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন একটি পিঠ ব্যাগ নিয়ে। সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজে তাঁকে দেখা যায় যে বাড়ির কাছে মোটরবাইক রেখে পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন তিনি। যদিও তারপর থেকেই আর কোনও খোঁজ মিলছিল না তাঁর।
পরিবারের দাবি, ওইদিন রাতেই বিজয়কৃষ্ণর ফোন থেকে বাড়িতে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে। এরপরই ভীত ও শঙ্কিত হয়ে শ্যামপদবাবুরা দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুলতলি থানার। ঘটনার তদন্তে নামে কুলতলি থানার পুলিশ। যদিও ওই যুবকের কোনও শত্রু ছিল না বলে তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছিল না দাবি পুলিশের
অবশেষে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পুলিশের হাতে ধরা পড়ে স্থানীয় জালাবেড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পালেরচক গ্রামের যুবক তন্ময় মণ্ডল। আর তন্ময়কে জেরা করেই খুনের ঘটনার কিনারা করে ফেলে পুলিশ। ধৃতকে নিয়ে গতকাল কুলতলি থানার আইসি (IC) অর্ধেন্দু দে সরকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পালেরচক গ্রামের ফাঁকা বাগানের যায়। সেই বাগানটি আবার তন্ময়দের। সেখানেই তন্ময় জানান যে, খুনের পর বিজয়কৃষ্ণকে মাটির তলায় পুঁতে দিয়েছেন।
যদিও ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) পার্থ ঘোষ ও এসডিপিও বারুইপুর অতীশ বিশ্বাস। সেখানে আসে ফরেন্সিক দল ও ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁদের উপস্থিতিতেই মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় বিজয়কৃষ্ণের পচাগলা দেহ। কুলতলি থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। খুনের কারণ জানতে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিজয়কৃষ্ণদের দোকানে তন্ময়দের যাতায়াত ছিল।
ধৃতকে শুক্রবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে। তদন্তের জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ। অবস্থা সম্পন্ন বাড়ির বড় ছেলের এই মর্মান্তিক খুনের ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে বাবা শ্যামপদ, মা শকুন্তলা ও স্ত্রী কাকলি কয়াল মণ্ডল।