গোসাবা: ফের কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের কবলে মৎস্যজীবী (Fisherman)। এবার গোসাবা ব্লকের সুন্দরবনের (Sundarban) মরিচঝাঁপি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার ঠাকুরাণ জঙ্গল থেকে মৎস্যজীবীকে তুলে নিয়ে গেল বাঘ (Tiger)। ওই মৎস্যজীবীর স্ত্রী সহ সঙ্গীরা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও বাঘের সামনে কার্যত অসহায় হয়ে পড়েন। ঘটনাটি শুক্রবার সকালে ঘটলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ব্যক্তির হদিশ মেলেনি। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ মৎস্যজীবীর নাম বিশ্বনাথ মণ্ডল (৪৭)। সাতজেলিয়া পঞ্চায়েতের এমলিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ এদিন সকালে স্ত্রী ও এক সঙ্গী সুকুমার মিস্ত্রির সঙ্গে মরিচঝাঁপি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার ঠাকুরাণ জঙ্গলের ফাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে যান। সকলের সামনেই একটি বাঘ তাঁদের নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশ্বনাথ মণ্ডলকে গভীর জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর হদিশ মেলেনি। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে বন দফতর।
এদিন বিশ্বনাথ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সুবর্ণাও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁর সামনেই বিশ্বনাথকে বাঘে টেনে নিয়ে যায়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্বনাথের সঙ্গী সুকুমার মিস্ত্রি জানান, তাঁরা ঠাকুরাণ জঙ্গল লাগোয়া খাড়িতে নৌকা নোঙর করে কাঁকড়া ধরার তোড়জোড় করছিলেন। তখনই গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ আচমকা বেরিয়ে এসে বিশ্বনাথকে টার্গেট করে নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একেবারে তাঁর ঘাড়ে কামড় বসিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যেতে থাকে। বিশ্বনাথকে বাঁচাতে তাঁরা নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, কোনও প্রতিরোধই কাজ হয়নি। শিকার ছাড়তে নারাজ বাঘের রুদ্রমূর্তির সামনে বিশ্বনাথের স্ত্রী সুবর্ণা ও তাঁর সঙ্গী অসহায় হয়ে পড়েন। বাঘ বিশ্বনাথকে টেনে জঙ্গলে নিয়ে চলে যায়।
অবশেষে সুবর্ণা ও সুকুমার মিস্ত্রি ডিঙি নৌকার বৈঠা বেয়ে গ্রামের ঘাটে ফিরে আসেন। এরপর কান্নায় ভেঙে পড়ে সুবর্ণা ও তাঁর দুই ছোটো ছোটো ছেলে। গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনার খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে বনদফতর। তবে মৎস্যজীবী বিশ্বনাথ মণ্ডল ও তাঁর সঙ্গীদের ওই জঙ্গলে প্রবেশ করার কোনও বৈধ অনুমতি ছিল না বলে সূত্রের খবর।