ডোমজুড়: পঞ্চায়েত ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। এবার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আয়োজিত সভাতেই হাতাহাতি জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল কর্মীরা। তাও ব্লক সভাপতির সামনে। রবিবার বিকালে ডোমজুড়ের মাকড়দহ-১ নম্বর অঞ্চলে এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় দুজন আহতও হয়েছেন। যদিও এই ঘটনাকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলতে নারাজ ব্লক সভাপতি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রায় সাত বছর বাদে ডোমজুড়ের মাকড়দহ-১ নম্বর অঞ্চলের কর্মীসভা ডাকা হয়েছিল মাকড়দহ বাজারের এক কমিউনিটি হল, উৎসব ভবন-এ। মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই কর্মী সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ঘরভর্তি কর্মীদের সঙ্গে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন জগৎবল্লভপুর ব্লক সভাপতিও। তাঁর কাছে পুরানো কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের একদল পুরোনো কর্মী। ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ রিয়াজ এবং সানি নামে দুই কর্মী তোলাবাজি এবং মাফিয়া রাজ চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে ব্লক সভাপতি ঘনিষ্ঠ লোকজনেরা এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারপরই তাঁরা পুরোনো কয়েকজন কর্মীর উপর আক্রমণ চালান বলে অভিযোগ। তাঁরা একেবারে ঝাপিয়ে পড়ে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সভায় উপস্থিত মহিলা তৃণমূল কর্মীরা। তাঁরা আতঙ্কে হল থেকে দৌড়ে বেরোতে হুড়োহুড়ি লাগিয়ে দেন। সবমিলিয়ে, চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আহত হন দুজন।
পুরোনো তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান ব্লক সভাপতির অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় তাঁর লোকজন তাঁদের উপর হামলা চালায়। অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব-ই প্রকট হয়ে ওঠে। যদিও জগৎবল্লভপুর ব্লক সভাপতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কিছু কর্মীকে সভার চিঠি দেওয়া হয়নি। তাই তারা আবেগের বশে হইচই করেছেন। কোন গন্ডগোল হয়নি। তৃণমূলে কোনও গোষ্ঠী নেই।”
এদিকে, এই ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতার তোপ, “তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতা দখল এবং টাকার ভাগাভাগি নিয়ে গন্ডগোলের কারণে এই ঘটনা। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে তত এই ধরনের ঘটনা ঘটবে।”