দাসপুর: আবাস যোজনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ দেব। শুধু মুখ খোলা নয়, আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিলেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীরের দাসপুরে এক সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে সরব হলেন অভিনেতা-সাংসদ। তিনি বলেন, “যাদের পাকা বাড়ি আছে তারা পেয়ে যাচ্ছে। যাদের মাথায় ছাদ নেই তারা পাচ্ছে না! এটা ভুল হচ্ছে। আমার দলই হোক বা অন্য কোন দল, যেটা ভুল সেটা ভুল।” একইসঙ্গে নিজের দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথাও পরোক্ষে স্বীকার করে নেন তৃণমূল সাংসদ। আবার বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর সদ্ভাবের প্রসঙ্গ তুলে রাজনৈতিক দলাদলি বন্ধ করারও বার্তা দেন।
এদিন দাসপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের দলাদলি বন্ধ করার বার্তা দিয়ে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর সখ্যতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ঘাটালের সাংসদ। তিনি বলেন, “আমি আর মিঠুন-দা যদি বাবা-ছেলের মতো থাকতে পারি, তাহলে সাধারণ মানুষ বা গ্রামের মানুষেরা কেন লড়াই করছে! রাজনীতি মানে মানুষের পাশে থাকা, আপদে-বিপদে থাকা। রাজনীতির জন্য মারপিট করতে হবে, রক্তারক্তি করতে হবে- এই রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। একটা দল করলে অপর দলকে শত্রু এমন ভাবা উচিত নয়।” নীচুতলার কর্মীদের কোন্দলে না জড়ানোর বার্তাও দিলেন অভিনেতা সাংসদ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে টলিউড ও বলিউডের বহু অভিনেতা ডাক পেলেও ব্রাত্য ছিলেন ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তী। সাম্প্রতিককালে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেবকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। যদিও পেশাগত কারণেই মহাগুরুর সঙ্গে আলোচনা করছিলেন বলে জানিয়েছিলেন দেব। বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না বলে জানান। এদিন মহাগুরুর সঙ্গে সখ্যতার প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল সাংসদ সেই বিতর্কেরই জবাব দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে হামলার ঘটনা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংসদ দেব। তিনি বলেন, “শিক্ষার অভাবের কারণেই ট্রেনে ঢিল মারা হয় কিংবা আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এটা মোদী বা দিদির ট্রেন নয়, এটা মানুষের ট্রেন। এটা কোনও রাজনীতির বাহন নয়। দেশের মানুষকে সঠিকভাবে শিক্ষিত করা যাচ্ছে না। আর সে কারণেই এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী থাকতে হচ্ছে আমাদের।”
প্রসঙ্গত, এদিন দাসপুরে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও অধিকার মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান তৃণমূল সাংসদ দেব। ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে প্রতিবন্ধীদের আগেই শনাক্ত করা হয়েছিল জেলা প্রশাসনের তরফে। এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সেই সমস্ত প্রতিবন্ধীদের হাতে সহায়ক সরঞ্জাম তুলে দিলেন অভিনেতা-সাংসদ। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক আয়েশা রানী,জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস সহ জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। এই অনুষ্ঠানের পর এদিন বিকালে দাসপুরের চাঁইপাটে এম পি কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের সাংসদ।