উত্তর দিনাজপুর : পার্সেল খুলতেই বিস্ফোরণ। ভয়াবহ এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন চারজন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের ঘটনা। এক ওষুধ দোকানদারের নাম লেখা একটি বাক্স নিয়ে আসেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। বাক্স খুলতেই ঘটে বিস্ফোরণ। আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কী কারণ, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে, উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ থানা এলাকার বাহারাইলে। আহত চারজনকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাঁরা সেই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে হেমতাবাদ থানার বাহারাইলে একটি ওষুধ দোকানের সামনে এসে দাঁড়ান এক টোটো চালক। তিনি একটি বাক্স দোকানের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যান। পার্সেলে লেখা ছিল প্রাপকের নাম। বাক্সটি আকারে বেশ বড়। বাক্সের প্রাপক হিসেবে ওই ওষুধের দোকানের মালিক বাবলু চৌধুরীর নাম লেখা ছিল। দেওয়া ছিল মোবাইল নম্বরও। সেই পার্সেল খুলতেই ভীষণ শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন আচমকা ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আশেপাশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাবলু চৌধুরী নিজেই বাক্সটি খোলেন। তাঁর আশেপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকজন। আহত হল তাঁদের মধ্যে তিন জন। আহতদের শরীর ঝলসে যায় বিস্ফোরণে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান আশেপাশের মানুষজন। তড়িঘড়ি তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
বাবলু চৌধুরী নামে ওই ওষুধ দোকানের মালিক জানান, এক টোটো চালক হঠাৎই দোকানের কাছে এসে বলতে থাকেন ‘দোকানটা কার?’ তিনি বেরলে তাঁকে টোটো চালক বলেন যে একটি পার্সেল রয়েছে তাঁর নামে। বাক্স দেখে ওষুধের কার্টন বলেই ভেবেছিলেন তিনি। সেই মতোই বাক্স খুলতে যান তিনি। তারপরই ঘটে এই বিস্ফোরণ। আহত আর এক ব্যক্তি জানান তিনি ওই দোকানে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। সেই সময় এই ঘটনা ঘটে।
আশরাফ আলী চৌধুরী নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই টোটোতে ছিলেন এক বৃদ্ধাও। আশরাফ আলীর নিজেরও দোকান রয়েছে পাশেই। প্রথমে তাঁর দোকানের সামনেই এসে দাঁড়ায় টোটোটি। কিন্তু বাক্স নিতে গিয়ে দেখেন তাতে লেখা রয়েছে বাবলু চৌধুরীর নাম, ফোন নম্বর। তখন তিনিই টোটো চালককে বাবলু চৌধুরীর দোকান দেখিয়ে দেন। এরপর সেখানে বাক্সটি নামিয়ে দেওয়া হয়।
এরকম ভাবেই পার্সেল বোমা বিস্ফোরণে মালদহের এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছিল বছর কয়েক আগে। ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল কুরিয়ার সার্ভিসে একটি পার্সেল এসেছিল অপর্ণা বিশ্বাস নামে ওই শিক্ষিকার কাছে। মালদহের রামকিঙ্কর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াতেন তিনি। পরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, টেলিফোন রিসিভারে ব্যবহৃত ‘ডি -টাচ ’ ডিভাইস পদ্ধতি ব্যবহার করে অত্যন্ত শক্তিশালী পার্সেল বোমা তৈরি করে পাঠানো হয়েছিল। এই ঘটনায় পরে দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
আরও পড়ুন : India’s Daily COVID-19 Update: শিকেয় সচেতনতা, একদিনেই আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ৩ লাখ! উর্ধ্বমুখী সংক্রমণের হারও