উত্তর দিনাজপুর: ভূত চতুর্দশীর আগে এ এক গা ছমছমে দৃশ্য দেখা গেল উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জে। গভীর রাতে পথে নেমেছেন তেনারা। কেউ নাচছেন, কেউ গাইছেন, কেউ আবার কিম্ভূত কিমাকার অঙ্গভঙ্গি করে বোঝাচ্ছেন, কোভিড বিধিটা মানতেই হবে। তা হলে কিন্তু মরণ ভূতের হাত থেকে রেহাই নেই।
হ্যালোইন মূলত পাশ্চাত্য রীতির অঙ্গ হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশেও তার ছোঁয়া এসে লেগেছে। বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাতেও হ্যালোইন উদযাপন চলে পুরোদস্তুর। শনিবার গভীর রাতে রায়গঞ্জে চলল হ্যালোইন উদযাপন। তবে এই ভূতেরা পথে নামলেন সামাজিক বার্তা নিয়ে। সাধারণ মানুষকে কোভিড বিধি মেনে চলতে সতর্ক করলেন ‘অশরীরীরা’।
শনিবার নিঝুম রাতে শহরের পথে পথে ঘুরে বেড়ালেন তেনারা। কোথাও বা গানের তালে ছন্দ মিলিয়ে নাচ, আবার কখনও পথচারীদের পথ আটকে সচেতন করল ভূতের দল। সময় থাকতে সচেতন না হলে পরিণতি ভয়ঙ্কর হতে পারে, তাই সতর্ক হতে বার্তা দিলেন তাঁরা। শনিবার রাতে শহরের লিচুতলা থেকে ফোয়াড়া মোড় হয়ে বিদ্রোহী মোড় পর্যন্ত পায়ে হেঁটে পথচারী, বাইক আরোহী প্রত্যেককেই করোনা সচেতনতার পাঠ শেখালেন তাঁরা।
রায়গঞ্জে বেশ কয়েক বছর ধরেই শহরের সঙ্গীতশিল্পী মহুয়া ঘোষের নেতৃত্বে কিছু যুবক যুবতী এই হ্যালোইন সপ্তাহ পালন করেন। কিন্তু এবার আর মহুয়া ঘোষ নেই। কিছুদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি। তবে তাঁর স্মৃতিতে সাধারণ মানুষকে করোনা নিয়ে সচেতন করতেই এই উদ্যোগ এলাকার ওই যুবক-যুবতীর। হাতে স্যানিটাইজার, মাস্ক নিয়ে এই বিশেষ দিনে চলল ভূতেদের কোভিড নিয়ে প্রচার।
ভূতেদের আচমকা রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখে প্রথমে কিছটা চমকে ওঠেন অনেকেই। তবে ভূতের মুখে কোভিডের সচেতন হওয়ার বার্তায় একটু অন্যরকম সচেতনতার প্রচার দেখলেন সাধারণ মানুষও। ওই ভূতের দলের ছিলেন বিশ্বায়ন দে, সায়শ্রী ভৌমিকরা।
সায়শ্রী জানালেন, “৩১ অক্টোবর হ্যালোইন নাইট। এটা মূলত বাইরের দেশে পালিত হয়। তবে আমরাও এটা পালন করি। মহুয়াদি এটা প্রথম শুরু করেছিলেন। আজ উনি আমাদের মধ্যে নেই। তবে সেই ঐতিহ্যটা তো আমরা ভুলে যেতে পারি না। সে কারণে তাঁকে মনে করে এই উদ্যোগ। আমাদের মূলত যেটা বক্তব্য, করোনা পরিস্থতিতে সকলে সচেতন থাকুন। আমরা ভূতেরাও স্যানিটাইজার নিয়ে ঘুরছি। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছি। সকলে যেন বেঁচে থাকে, সুস্থ থাকে তাই এটুকু মানতেই হবে। সে বার্তাই আমরা দিতে চাই।”
অন্যদিকে বিশ্বায়ন দে’র কথায়, “আমরা মনে করছি আমরা সকলে করোনায় মারা গিয়েছি। ভূত হয়ে গিয়েছি। এক একটা অতৃপ্ত আত্মা। আমরা জন সাধারণকে বলছি, আপনারা যদি সামাজিক দূরত্ব বিধি না মানেন, স্যানিটাইজার ব্যবহার না করেন তা হলে আপনাদেও আমাদের মতোই হতে পারে।”
আরও পড়ুন: Madhyamik-HS 2022: অপেক্ষার অবসান, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের দিনক্ষণ নিয়ে বড় ঘোষণা