উত্তর দিনাজপুর: সরকারি জমি বেদখল করে তাতে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। তাঁকে ইতিমধ্যেই নোটিস দিয়েছে প্রশাসন। ৩ দিনের মধ্যে দ্রুত নির্মাণ ভেঙে জমি খালি না করলে, কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে তৃণমূল নেতাকে নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিএলআরও-র তরফে সেই নোটিস পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায়। শুরু রাজনৈতিক তরজা।
কর্ণজোড়ায় জেলা শাসকের দফতর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একেবারে প্রশাসনিক কর্তাদের বাংলো লাগোয়া সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরেই রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও তৃণমূলের দলনেতা অনিল দেবনাথের দখলে। সেখানে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিন কয়েক আগে ওই জমিতেই পাকা দোকান ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যেই কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসা মাত্রই সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ তিন দিনের মধ্যে ভেঙে জমি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৈরি হওয়া দোকান ঘরের দেওয়ালে। সময়ের মধ্যে নির্দেশ পালন না করলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলেও উল্লেখ রয়েছে সেই নোটিসে।
তবে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বক্তব্য, এই জমি তাঁর নামে নয়, এই ব্যবসাও তাঁর নামে না। তাঁর স্ত্রীর নামে রয়েছে। তবে তাঁকে কেন নোটিস পাঠানো হল, সেটাই বুঝতে পারছেন না তিনি।
অনীল দেবনাথ নামে ওই তৃণমূল নেতার পাল্টা যুক্তি, ওই এলাকায় আরও সরকারি জমি বেদখল হয়ে আছে কিন্তু প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেই তাঁর পালটা অভিযোগ।
তবে নিজেকে না সামলে অন্যের দিকে আঙুল তোলায় যথেষ্টই ক্ষুব্ধ প্রশাসনিক কর্তারা। রায়গঞ্জের বিএলআরও শুভঙ্কর সাহা বলেন, “প্রশাসনের কাজ প্রশাসন করবে। ওঁ নিজেরটা সামলান। আর শাসক হোক বা বিরোধী আইন সবার জন্য সমান।”
তবে এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। তৃণমূল নেতার এই কাণ্ডে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। এই বিষয়ে তৃণমূলের রায়গঞ্জের বিধায়ক ও পিএসি-র চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণীর দাবি, “তৃণমূল করলেই যে বেআইনি কাজ করা যাবে, তা নয়। আইন সবার জন্য এক। প্রশাসন যা করেছে সেটা আইন মাফিক কাজ করেছে, তাই এই বিষয়টি শাসক দলও রেয়াত করবে না।”
তবে তৃণমূল নেতার জমি বেদখল আর তাতে প্রশাসনের নোটিস জারি, যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এখন তুঙ্গে।