রায়গঞ্জ : একুশে জুলাই। করোনা আবহে দুই বছর ভার্চুয়ালি পালিত হওয়ার পর ফের স্বমহিমায় ফিরছে তৃণমূলের একুশে জুলাই। কাউন্টডাউন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে তৃণমূলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা এসে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরগুলিতে। কেউ এসেছেন ট্রেনে, কেউ বাসে। অস্থায়ী শিবিরগুলিতেই রাত কাটিয়ে মমতার বক্তৃতা শুনে আবার ওই একইভাবে ট্রেনে বা বাসে চেপে নিজেদের জেলায় ফিরে যাবেন তাঁরা। আর এরই মধ্যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ স্টেশনে। ট্রেনে চেপে এসেছেন, অথচ টিকিট কাটেননি। বিনা টিকিটেই নাকি শ’য়ে শ’য়ে যাত্রী উঠে গিয়েছেন ট্রেনে। আর এমন দাবি করছেন খোদ তৃণমূলের কর্মীরাই। ২১ জুলাই সভায় যেতে নাকি ট্রেনের টিকিট লাগে না। শুধু দলের দেওয়া ব্যাজেই হচ্ছে বৈতরণী পার। আর এই নিয়েই এখন জেলার রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
এদিন সকালে রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে ২১ জুলাইয়ের সভায় যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দেন এক ঝাঁক তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক। এমনই এক তৃণমূল কর্মী রিতা দাস। তিনিও ধর্মতলায় যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনার জন্য। ট্রেনে করেই রওনা দিয়েছেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি ট্রেনে যাওয়ার টিকিট কেটেছেন কি না। উত্তরে তিনি সোজা জানিয়ে দেন, “না। আমাদের কার্ড (ব্যাজ) দিয়েছে। ব্যাজ খুলে রাখতে না করেছে।” আবু সৈয়দ আলি নামে আরও এক তৃণমূল কর্মীকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনিও সটান ব্যাজ দেখিয়ে বলে দেন, “টিকিট তো, এই এটাই দিয়েছে পার্টির থেকে। এটাই টিকিট। এটা দেখালেই ট্রেনে আর কোনও অসুবিধা হবে না।”
শুধু রিতা বা আবুই নন, এমন বহু তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকও টিকিট ছাড়া রায়গঞ্জ থেকে ট্রেনে চেপেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল শিবির আবার বিষয়টির অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ভিড়ের মধ্যে যাতে দলীয় কর্মীদের চিনতে সুবিধা হয়, সেই কারণেই এই ব্যাজ দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনীতির অন্দরে। বিজেপির জেলা সহসভাপতি নিমাই কবিরাজ বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন, “একুশে জুলাই শহিদ দিবস। এই শহিদ দিবস তৎকালীন বাম সরকারের আমলে এক দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনাকে এখন তৃণমূল হাইজ্যাক করে নিয়েছে। একুশে জুলাই সারা বাংলার মানুষকে এরা বিভ্রান্ত করছে। শহিদ দিবসকে উপলক্ষ করে সাধারণ যাত্রীরা অত্যাচার এবং হয়রানির শিকার হন। রেলে তাঁরা বিনা পয়সায় যাচ্ছেন। বাসে, ট্রেনে, ট্রামে… সমস্ত ক্ষেত্রে নিত্যযাত্রীদের বিভিন্নভাবে ধমক দেওয়া হয়, তাঁদের জায়গা জোর করে দখল করে নেওয়া হয়। এর আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”