রায়গঞ্জ : স্ত্রীকে রান্না করতে দেখে মায়ের ঘরে প্রবেশ করেছিলেন স্বামী। সেখানেই কথা বলছিলেন। ততক্ষণে বাইরে কী ঘটে গেল, তা জানতে পারেননি তিনি। ঘর থেকে বেরিয়েই দেখেন গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন স্ত্রী। ততক্ষণে কার্যত জ্বলতে শুরু করেছে তাঁর শরীর। কোনও ক্রমে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও স্ত্রী আবারও গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামীও অগ্নিদগ্ধ হন। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন ওই ব্যক্তির বৌদিও।
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া বাহীন গ্রাম পঞ্চায়েতের মনিপাড়ায়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা শঙ্কর মন্ডল। তাঁর স্ত্রী সাধনা মন্ডল গায়ে কেরোসিন ঢেলে, আগুল জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন একই পরিবারের তিন জন।
শঙ্কর মন্ডল জানান, তাঁর স্ত্রী সাধনা বর্মন শুক্রবারই বাপের বাড়ি থেকে ফিরে এসেছিলেন। এরপর রাতের রান্নার জন্য চাল কিনে নিয়ে আসেন। রাতের খাবার নিয়ে দুজনে আলোচনাও করেন। পরে শঙ্কর মায়ের ঘরে চলে যান। আর তখনই সাধনা শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন বলে শঙ্করের দাবি।
তিনি জানান, স্ত্রীকে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন, যাতে গায়ে আগুন না দেন। কিন্তু কোনও কথাই শোনেননি সাধনা। তখনই তাঁকে বাঁচাতে যান শঙ্কর ও তাঁর এক বৌদি। এতেই তিনজন অগ্নিদগ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সংসারে কোনও অশান্তি হয়েছিল কি না, কী কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই মহিলা, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মনু মন্ডল জানান, ঘটনার কথা শুনে লোকজন নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন তাঁরা। পরে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাধনা মন্ডলের অবস্থা আশঙ্কাজনল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে, ঠিক কী কারণে এভাবে সাধনা আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য জানান, আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হবে বিষয়টি।