পূর্ব মেদিনীপুর: হোগলা জঙ্গলে আগুন ধরালেন এলাকার জনপ্রতিনিধি। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে সেই জঙ্গল থেকে প্রাণপণে ছুটে বেরিয়ে আসে চোর। বৃহস্পতিবার চোর ধরতে এমন কাণ্ডে হইচই পাঁশকুড়ায়। কেউ কেউ তো প্রথমে ভেবেছিলেন, বুঝি সিনেমার শুটিং চলছে। যদিও মুহূর্তে ভাঙে ভুল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ, দমকলের ইঞ্জিন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া থানার ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এদিন এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে পাঁশকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় চুরি ছিনতাইবাজদের দাপট বেড়েছে। জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির ব্যাটারি পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল চোরেরা। পাঁশকুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সামিরুদ্দিনের গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসায় কারণে তাঁর একাধিক গাড়ি জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড় করানোও থাকে। সেই গাড়ি থেকেও প্রায় প্রায়ই ব্যাটারি চুরি হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
এদিকে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও লাভ হয়নি। কাউন্সিলরের গাড়ির ব্যাটারি নয়, একাধিক গাড়ি থেকে ব্যাটারি চুরি যাচ্ছিল। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এরকম একটি গাড়ি থেকে ব্যাটারি চুরি করতে গেলে ধরা পড়ে যান এক যুবক।
অভিযোগ, খবর দেওয়া হয় কাউন্সিলরকে। এদিকে এলাকার লোকজন চোর ধরতে গেলে রাস্তার ধারে বিরাট হোগলা জঙ্গলে ঢুকে যান অভিযুক্ত। ততক্ষণে পাঁশকুড়া থানায়ও খবর চলে যায়। এদিকে পুলিশ আসার আগে চোরকে ধরতে ময়দানে নেমে পড়েন খোদ কাউন্সিলর।
জঙ্গলে চারপাশে লোকজনকে দাঁড় করিয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন। তার আগে খবর দিয়ে রাখেন দমকলকেও। আগুন লাগানোর কিছুক্ষণের মধ্যে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে চোর। অভিযুক্ত যুবককে ধরে নেয় পুলিশ। ততক্ষণে দমকলও আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলে।
পাঁশকুড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সামিরুদ্দিন বলেন, “প্রায় দু’ মাস ধরে পাঁশকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় নেশাখোরদের দাপট বাড়ছিল। বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতিও বেড়েই চলেছিল। বৃহস্পতিবার একজন চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরাও পড়েন। ধরতে গেলে অভিযুক্ত হোগলার জঙ্গলে ঢুকে পড়েন। এরপর অভিযুক্তদের ধরতে হোগলা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তখনই বেরিয়ে আসে।” পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “অভিযুক্ত যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”