আলিপুরদুয়ার: হিংস্র লেপার্ডের (Leopard) সঙ্গে টানা ১০ মিনিট লড়ে প্রাণে বেঁচে গেলেন চা বাগানের এক মহিলা শ্রমিক। বেঁচে থাকার অদম্য জেদের কাছে পরাজয় স্বীকার করে পালিয়ে গেল লেপার্ডটি। রোমহর্ষক ঘটনাটি এদিন সকাল ১১টা নাগাদ আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের ভাতখাওয়া চা বাগানে ঘটেছে।
এদিন ভাতখাওয়া চা বাগানের মহিলা শ্রমিক লীলা ওরাঁও বাগানের ১৫ নং সেকশনে কাজ করছিলেন। সেই সময়ে একটি লেপার্ড তাঁর কাছে চলে আসে। এরপর আচমকাই আক্রমণ চালায় পিছন থেকে। মৃত্যু চোখের সামনে দেখতে পেয়ে প্রাণপন বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যান লীলাদেবী। মিনিট দশেক খালি হাতেই লড়ার পর অবশেষে হার স্বীকার করে লেপার্ডটি পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় লীলা ওরাঁও আহত হন, কিন্ত প্রাণে বেঁচে যান।
বাগানে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকরা লীলা ওরাঁওকে উদ্ধার করে লতাবাড়ি গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্দীপন সরকার মহিলা চা শ্রমিকের সাহসকে কুর্ণিশ জানান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মহিলার চিকিৎসা চলছে এবং তিনি সুস্থ আছেন। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কমল ওরাঁও বলেন, “ওই এলাকায় কয়েকদিন থেকে কয়েকদিন ধরে শাবক-সহ একটি লেপার্ডকে দেখা যাচ্ছিল। সাধারণত পুরুষ লেপার্ডের হাত থেকে নিজের শাবকদের বাচাতে চাবাগানের নালায় আশ্রয় নেয় মা লেপার্ড। না হলে পুরুষ লেপার্ড তার সন্তানদের খেয়ে ফেলে। শাবক-সহ মা লেপার্ড ভয়ংকর হিংস্র হয়। এই লেপার্ডকে পরাজিত করা সোজা কথা নয়। এই লড়াইতে জিতে লীলা এখন আমাদের চা বাগানের বাঘিনী হয়ে উঠেছে। ও সুস্থ আছে।”
আরও পড়ুন: ‘বাধ্য হয়ে’ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিল দিলীপ ঘোষের পরিবার!
কাছেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমতি রেঞ্জের জঙ্গল। সেখান থেকে শাবক নিয়ে ভাতখাওয়া চাবাগানের নালায় আশ্রয় নিয়েছে স্ত্রী লেপার্ড। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম বিভাগের উপক্ষেত্র অধিকর্তা উমর ইমাম বলেন, “কাছেই বনাঞ্চল। তাই চা বাগানে লেপার্ড ঢুকতেই পারে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। জখম মহিলা সুস্থ আছেন। এলাকায় বনকর্মীরা টহল দিচ্ছেন। কোনও ভাবেই বন্য জন্তুকে আঘাত করা বেআইনি। আমরা ঘটনা ক্ষতিয়ে দেখছি।”
আরও পড়ুন: ‘মনীষীদের নিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত’, নয়া তত্ত্ব দিলীপের