কিয়েভ: বড়সড় বিস্ফোরণে কের্চ সেতুর একাংশ ধ্বংস হওয়ার পরই, ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরের অসামরিক অঞ্চলে হামলা চালালো রাশিয়া। রবিবার (৯ অক্টোবর) ভোরে শহরের এক আবাসিক এলাকায় রুশ গোলাবর্ষণে এই অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, ৬ শিশুসহ আরও অন্তত ৪৯ জন আহত হয়েছেন। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাপোরিঝিয়া সিটি কাউন্সিলের দাবি, অন্তত ২০টি বাড়ি এবং ৫০টি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নীচে আরও মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে মনে করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী কের্চ সেতু ধ্বংস করার প্রতিশোধেই ক্রেমলিন এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জাপোরিঝিয়া শহরে হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগেই, কের্চ সেতুতে একটি রহস্যময় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বিস্ফোরণে রেললাইনে আগুন লেগে যায়। কের্চ সেতুর একাংশ উড়ে গিয়ে তলিয়ে যায় কৃষ্ণ সাগরে। এই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। তার থেকেও বড় কথা রাশিয়ার সরবরাহ শৃঙ্খল দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই হামলায় স্বভাবতই দারুণ ক্ষুব্ধ হয়েছে ক্রেমলিন। হামলার পরই তারা প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে এই কের্চ সেতুতে হামলার দায় স্বীকার না করা হলেও, বিস্ফোরণের পর উদযাপনে মেতেছিল কিয়েভ।
রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় এই বড় ধাক্কা লাগার পরই জাপোরিঝিয়া গোলাগুলি শুরু হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি এই হামলাকে ‘পরম অশুভ’ বলে উল্লেখ করেন। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, “আবার জাপোরিঝিয়া। শান্তিপ্রিয় মানুষের উপর আবারও নির্দয় হামলা। ঠিক মাঝরাতে আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে অসভ্য ও সন্ত্রাসবাদীরা। এটা পরম অশুভ হামলা। যে এই হামলার আদেশ দিয়েছে, আর যারা এই আদেশ পালন করেছে, তাদের আইনের ও জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হবে।”
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বারবারই জাপোরিঝিয়ায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গত সপ্তাহে মস্কো ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলকে তাদের দেশের অংশ হিসেবে যুক্ত করেছিল, তারই মধ্যে অবস্থিত জাপোরিঝিয়া। তবে শহরটি এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। এর আগে রুশ বাহিনী নিকটবর্তী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দখল নিয়েছিল। বিদ্যুতকেন্দ্রটিকে তারা তাদের স্থানীয় সেনা ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করেছিল।