ঢাকা: ফাঁসির অপেক্ষা করছিল ওরা। একসঙ্গে ছিল মাত্র ২৫ দিন। তার মধ্যেই পরিকল্পনা করেছিল, সেই পরিকল্পনা মতো জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছিল এবং সেই মতো কাজও করেছিল। জেলের ছাদ ফুটো করে, পেল্লায় উঁচু প্রাচীর টপকে পালিয়েছিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। মিনিট দশেকের মধ্যেই তাদের ফের ধরে জেলে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে পুলিশ। তবে, বুধবার ভোরে ১০ মিনিটের জন্য হইচই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের বগুড়া জেলা কারাগারে। জেলার মহম্মদ ফরিদুর রহমান জানিয়েছেন, চারজনই ফাঁসির আসামি। বিস্তৃত পরিকল্পনা করে তারা জেল থেকে পালালেও, বেশি দূর যেতে পারেনি। কারাগারের পাশের এক এলাকা থেকেই তাঁদের ধরে ফেলে পুলিশ।
তবে,তারা যা পরিকল্পনা করেছিল, শুনলে মনে হতে পারে কোনও হলিউডি সিনেমা। বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এবং জেলাশাসক সইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি – মহম্মদ নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), মহম্মদ ফরিদ শেখ (২৮), মহম্মদ আমির হামজা ওরফে আমির হোসেন (৩৮) এবং মহম্মদ জাকারিয়া (৩১)। ১ জুন থেকে ওই সেলে একসঙ্গে বন্দি ছিল তারা। গত ২৫ দিনের মধ্যেই কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল তারা। প্রথমে তারা জেলের বাইরে থেকে ছাদ ফুটো করার যন্ত্র সংগ্রহ করেছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেই যন্ত্রপাতি দিয়ে ছাদ ফুটো করেছিল তারা। এরপর, নিজেদের বিছানার চাদর একটির সঙ্গে একটি পরপর গিট দিয়ে বেঁধে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছিল। চাদর দিয়ে তৈরি ওই দড়ি দিয়েই তারা জেলের সুউচ্চ প্রাচীর টপকেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ভোর ৩টে বেজে ৫৬ মিনিট নাগাদ তাদের কাছে খবর আসে, বগুড়া জেলা কারাগার থেকে চার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পালিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বগুড়া সদর থানায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়। বগুড়া জেলা কারাগারের পাশেই রয়েছে করতোয়া নদী। সদর থানার টহলদারি দল সেই নদীর অন্য পারের চাষীবাজারের মাছের আড়ত এলাকা থেকে ভোর ৪টে ১০ মিনিটে তাদের গ্রেফতার করে। এরপর তাঁদের বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলার ফরিদুর রহমান চার বন্দিকে শনাক্ত করেন।