রিয়াধ: এতদিন পর্যন্ত তেল ভান্ডারের জেরে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে দাপট দেখাত সৌদি আরব। কিন্তু, জ্বালানি তেল ক্রমে ফুরিয়ে আসছে। তাছাড়া, কার্বনমুক্ত পৃথিবীর লক্ষ্যে জৈব জ্বালানির ব্যবহারও ক্রমে কমছে। এই অবস্থায় তেল নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ করেছেন সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। তেল নির্ভরতা থেকে মুক্তির জন্য ‘ভিশন ২০৩০’ গ্রহণ করেছেন এমবিএস। অর্থনীতিকে বহুমুখী করে তুলতে, বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংস্কার করা হয়েছে। এবার ম্যাজিক দেখাতে শুরু করল সৌদি যুবরাজের এই সকল সংস্কারমুখী পদক্ষেপ। প্রথমবার, সৌদির জিডিপির ৫০ শতাংশ এল জ্বালানি খাতের বাইরে থেকে। অর্থাৎ, তেল আর সৌদি অর্থনীতির একমাত্র অবলম্বন নয়।
সৌদি অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে সৌদি আরবের জিডিপির ৫০ শতাংশ এসেছে অ-তেল ক্ষেত্র থেকে। তেল ছা়ড়াই সৌদির অর্থনীতি ১.৭ লক্ষ কোটি সৌদি রিয়াল অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় টাকা হয়েছে। যা এই আরব দেশের মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ। এর আগে, সৌদি আরবে কখনও তেলের অর্থনীতিকে টেক্কা দিতে পারেনি বাকি ক্ষেত্রগুলি। এটা সৌদি সরকার বড় জয় হিসেবে দেখছে। এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট বলে দিচ্ছে, তেল ছাড়া বিকল্প আয়ের উপায় পেয়ে গিয়েছে সৌদি। সৌদি সরকারের দাবি, গত দুই বছরে বেসরকারি বিনিয়োগের অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে। এর ফলেই এই সাফল্য এসেছে। তেল ছাড়া সৌদির জিডিপি ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তেলকে টেক্কা দিচ্ছে কোন কোন খাতগুলি?
২০২১-২২ সালে শিল্প ও বিনোদন ক্ষেত্রে ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। ১০৬ শতাংশ বৃদ্ধি ধরা পড়েছে এই ক্ষেত্রে। খাদ্য এবং বাসস্থানের মতো ক্ষেত্রে ৭৭ শতাংশ এবং পরিবহন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশে বৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৩-এ স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিনোদনের মতো সামাজিক পরিষেবা ক্ষেত্রে ১০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি নথিভুক্ত করা হয়েছে। এরপর রয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্রে ৭.৩ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। বাণিজ্য, রেস্তোঁরা এবং হোটেল খাতে ৭ শতাংশে বৃদ্ধি ধরা পড়েছে। গত দুই বছরে ‘ঐতিহাসিক বৃদ্ধি’ পর্যটন ক্ষেত্রে। যার প্রভাব পড়েছে ঘটেছে পরিষেবা খাতে। এই ক্ষেত্রে ৩১৯ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্যটন এবং বিনোদনের গন্তব্যে পরিণত হয়েছে সৌদি আরব।