সাও পাওলো: যদি বলা হয় খুব দামি একটা গরু। কত দাম হতে পারে? কতদূর আপনি কল্পনা করতে পারেন? আপনার কল্পনাকেও ছাপিয়ে যেতে বাধ্য এই গরুটির দাম। ৪৮ লক্ষ মার্কিন ডলার বা ৪০ কোটি টাকা! সম্প্রতি, ব্রাজিলের এক নিলামে এই ‘নেলোর’ প্রজাতির গরুটি ‘বিশ্বের সবচেয়ে দামি গরু’ হিসেবে বিক্রি হয়েছে।
গরুটির নাম, ভিয়াতিনা। তার দাম রেকর্ড গড়েছে ঠিকই, কিন্তু, এই দামকে শুধু তার বিচ্ছিন্ন মূল্য হিসেবে দেখলে ভুল হবে। প্রাণী বিজ্ঞানীদের মতে, নেলোর প্রজাতির গরুর জিনগত উপাদানের সম্ভাব্যনাও লুকিয়ে রয়েছে ভিলাতিনার এই অভাবনীয় দামের পিছনে। দামই বলে দিচ্ছে, এই জাতটির কত উন্নত গুণমানের।
নিলামটি হয়েছে ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের আরন্দুতে। ভিয়াতিনার বয়স এখন সাড়ে চার বছর। তার এক-তৃতীয়াংশ মালিকানা বিক্রি হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বা ১২ কোটি ৭২ হাজার টাকায়। ফলে তার মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৩ লক্ষ মার্কিন ডলারে। গত বছরও ভিলাতিনার রেকর্ড দাম উঠেছিল। তার অর্ধেক মালিকানা বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৮ লক্ষ ডলার বা ৬ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকায়।
প্রসঙ্গত, নেলোর জাতের গরুর উৎপত্তি কিন্তু ভারতে। অন্ধ্র প্রদেশের নেলোর জেলার নাম থেকেই এই প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে। ১৮৬৮ সালে জাহাজে প্রথম জোড়া নেলোর গরু ব্রাজিলে এসেছিল। গত শতাব্দীর ছয়ের দশকে এই গরুর সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছিল ব্রাজিলে। প্রায় একশো গরু নিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। বাকিটা ইতিহাস। এখন ব্রাজিলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গবাদি পশুর জাত হয়ে উঠেছে নেলোর গরু।
এর বৈজ্ঞানিক নামেও ভারত জড়িয়ে আছে, বস ইন্ডিকাস (Bos indicus)। বিজ্ঞানীদের মতে, এই জাতের গরু উষ্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। অত্যন্ত শক্তিশালী। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি, আর, মাংসও অত্যন্ত উচ্চমানের। ফলে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এই গরু পালন অত্যন্ত সুবিধার।