কাবুল: ২০২১ সালে দীর্ঘ কয়েকমাসের যুদ্ধের পর পুনরায় কাবুলের (Kabul) মসনদ দখল করেছিল তালিবান (Taliban)। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সেদেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসরফ ঘানি। দীর্ঘ ২০ বছর আরও একবার তালিব যোদ্ধাদের হাতে চলে গিয়েছিল আফগানিস্তানের (Afghanistan) ক্ষমতা। তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেদেশের মানুষ চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। ২০০১ সালের আগে তালিবান রাজে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। সব থেকে বেশি অত্যাচারিত হয়েছিলেন সেদেশের মহিলারা। তাদের জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ, চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল একের পর এক ফতোয়া। এমনকী তাদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তাই পুনরায় তালিবানের হাতে শাসন ভার যাওয়ার পর মহিলাদের আতঙ্ক ছিল সব থেকে বেশি। আতঙ্কিত হওয়া যে নিতান্তই অমূলক নয়, দাঁড়ি কাটা বন্ধ থেকে শুরু করে গান বাজানোতে নিষেধাজ্ঞার মতো একাধিক উদ্ভট নিয়ম চালু করা হয়েছিল। এবার তালিবান রাজে আরও এক অদ্ভূত সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়েছে। দেশের স্কুলগুলিতে পৌঁছে গিয়েছে এক নির্দেশিকা। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখন থেকে আফগানিস্তানের স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্ররা টাই পরতে পারবেন না।
আফগানিস্তান শিক্ষা দফতরের এক নির্দেশিকায় ছাত্র ও শিক্ষকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, এখন থেকে তারা স্কুলে টাই পড়তে পারবেন না। যদিও আফগান শিক্ষা মন্ত্রকের প্রধান হাসানুল্লাহ খাতাব বলেন, ‘হিজাব ও টাই নিয়ে আফগান শিক্ষা মন্ত্রকে বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্রই নির্দেশিকা।’ তবে আফগান শিক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র আজিজ আহমেদ রায়ান স্পষ্টতই জানিয়েছেন, স্কুলে টাই পরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট থেকে দেশের শাসন ক্ষমতা হাতে তুলে নেওয়ার পর সবথেকে বেশি সমস্যার মুখোমুখি আফগান মহিলার। মহিলারদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার নির্দেশিকার পাশাপাশি শিক্ষার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কাবুলের স্কুলগুলিতে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, মেয়েরা হিজাব পড়ছে কিনা সেই বিষয়ে কড়া নজর রাখতে। ছেলেদের সব ধরনের স্কুল খুলে গেলে, মেয়েদের মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলি এখনও বন্ধ। তবে তালিবান সরকার এখনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। তাই চাপের মুখে তারা জানিয়েছে, মেয়েদের স্কুল খোলার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। খুব দ্রুতই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। এখন আফগানিস্তান পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।