ঢাকা: আবারও বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যের আর্জি চিনের। এই মর্মে বাংলাদেশের সঙ্গে এই বছরই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় ড্রাগনের দেশ। বাংলাদেশে চিনের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (Free Trade Agreement) করার বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় বসে রয়েছে চিন। চিনা দূতাবাসের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সেই চুক্তি এ বছরের মধ্যেই করতে হবে।
শুধুমাত্র চিনের দূতাবাসের তরফেই এই বিবৃতি জানানো হয়নি। মন্ত্রণালয়ে এসে বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে বৈঠক করে মুক্ত বাণিজ্যের চুক্তি করার জন্য আর্জি জানায় চিনের রাষ্ট্রদূত। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই বিষয়ে জানান ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তরে এই বৈঠক হয়।
বুধবার এই বৈঠকের পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, শিল্প উন্নয়ন, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিনের অগ্রগতি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বাংলাদেশের। তিনি বলেন, “অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা করছে চিন। এ দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চায় তারা। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত এসব বিষয়েই তুলে ধরেছেন।” এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “এ বিষয়ে চিন বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল। এটি একটি জটিল সমস্যা। যা বছর বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ অনেক পক্ষ জড়িত রয়েছে।”
ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যাপারে কাজ করছে চিন।” রোহিঙ্গাদের জন্য চিনের সহায়তা কর্মসূচির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে চিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “বৈশ্বিক অতিমারি করোনার প্রভাব থাকার পরও গত অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে থাকা রীতিমতো বিস্ময়কর। এ ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।” যুদ্ধের কারণে জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি থাকলেও এ বছরও বাংলাদেশ ভাল করবে বলে আশা করেন তিনি। উল্লেখ্য, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে চলা বাণিজ্য এক তরফা চিনের দখলে। বাংলাদেশ বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে চিনে। চিন থেকে আমদানি করে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ সুযোগ নিয়েই চিন আরও ব্যবসা বাড়াতে চায় বাংলাদেশের সঙ্গে। এত বড় বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে চিনের সঙ্গে পেরে উঠার কথা নয় বাংলাদেশের। উপরন্তু এই চিনের সঙ্গে এই চুক্তি হলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।