PM Modi in USA: আসছেন মোদী, কীভাবে লাল কার্পেট পেতে দিচ্ছে আমেরিকা জানেন?

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jun 16, 2023 | 1:57 PM

চলতি মাসের শেষেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর নিয়ে একদিকে যেমন উত্তেজনায় ফুটছেন প্রবাসী ভারতীয়রা, তেমনই তাঁকে মার্কিন মুলুকে স্বাগত জানাতে মুখিয়ে রয়েছেন মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং সেই দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট নাগরিকরা।

PM Modi in USA: আসছেন মোদী, কীভাবে লাল কার্পেট পেতে দিচ্ছে আমেরিকা জানেন?
বাইডেনের আমন্ত্রণে আমেরিকা যাচ্ছেন মোদী

Follow Us

ওয়াশিংটন: চলতি মাসের শেষেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২১ থেকে ২৪ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন তিনি। চারদিনের সফর ঠাসা কর্মসূচিতে। যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে যোগ দিবস উদযাপন, হোয়াইট হাউসে রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ, মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ, ওয়াশিংটনে প্রবাসী ভারতীয়দের সামনে ভাষণের মতো অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর নিয়ে একদিকে যেমন উত্তেজনায় ফুটছেন প্রবাসী ভারতীয়রা, তেমনই তাঁকে মার্কিন মুলুকে স্বাগত জানাতে মুখিয়ে রয়েছেন মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং সেই দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট নাগরিকরা।


প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রাজনীতিক অ্যামি বেরা। তাঁর মতে বর্তমান বিশ্বে উদ্ভূত ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থান – এই দুই কারণই নরেন্দ্র মোদীর এই সফরের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে, দুই দেশের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার সত্যিকারের সুযোগ তৈরি হতে পার এই সফরের মধ্য দিয়ে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে আমেরিকার সব রাজনৈতিক দলই আগ্রহী। তিনি আরও জানিয়েছেন, দক্ষিণ চিন সাগর, ভারতের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এবং এশিয়ার অন্যান্য স্থানে যেভাবে চিন আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা করছে, সেটাই মুক্ত অর্থনীতির দেশগুলিকে কাছাকাছি এনে দিয়েছে। ভারত-মার্কতিন সম্পর্কের উন্নয়নে এটাই অন্যতম কারণ।


মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ অ্যালাবামা প্রদেশের প্রতিনিধি জেরেমি গ্রে আবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন। যোগাভ্যাসের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব দুই দেশের সাধারণ মূল্যবোধ এবং সহযোগিতার শক্তির প্রতিফলন।” কংগ্রেসম্যান বিল পোসে মার্কিন কংগ্রেসে প্রদানমন্ত্রী মোদীকে তাঁদের দেশে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনিও ভারত ও আমেরিকার ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর মতে, চিনা হুমকির মুখে ভারত ও আমেরিকার গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চেতনা, ইন্দো-প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকায় শান্তি ও স্থিতি আনবে। ভারতীয়-মার্কিনিদের তিনি আমেরিকার জনজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে উল্লেখ করেছেন।


বিভিন্ন মার্কিন প্রদেশের সেনেটররাও স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। সেনেটর সিন্ডি হাইড-স্মিথ বলেছেন, “আগামী সপ্তাহে, মার্কিন কংগ্রেসের একটি যৌথ সভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।”
ওহায়োর সেনেটর শেরড ব্রাউন বলেছেন, “আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাই। ওহায়োতে প্রচুর ভারতীয়-মার্কিন থাকেন। এমনকি, আমাদের এখানেই মার্টিন লুথার কিং-এর নামে নামাঙ্কিত রাস্তায় মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি রয়েছে। আমরা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে উন্মুখ।” মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন বলেছেন, “নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির মতো ভারত ও আমেরিকার বিভিন্ন সাধারণ স্বার্থের বিষয় রয়েছে। মানুষে মানুষে বন্ধন, বাণিজ্যিক ক্ষেত্র কিংবা উদ্ভাবন – ভারতের সঙ্গ বিভিন্ন দিক থেকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে মিসৌরির। মিসৌরির প্রায় ২১০০০ বাসিন্দার জন্ম হয়েছিল ভারতে। আমি সকল মিসৌরিবাসীর পক্ষ থেকে আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছি।”


সাড়া পড়ে গিয়েছে মার্কিন-ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যেও। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অরবিন্দ পানাগারিয়া বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই রাষ্ট্রীয় সফর ভারতীয়-মার্কিন সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়।” ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস-এর নিুরোসায়েন্সের অধ্যাপক পবন সিনহা ভারত ও মার্কিক যুক্তরাষ্ট্রকে পরস্পরের স্বাভাবিক অংশীদার বলে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “দুই দেশই বিজ্ঞানের উপর জোর দেয়। পাশপাশি স্বাস্থ্যপরিষেবা থেকে শুরু করে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ যাত্রা – দুই দেশই এখন একই ধরনের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। অনেক ক্ষেত্রেই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরস্পর পরস্পরের সহায়ক হয়ে ওঠে।” ভারত-মার্কিন শিল্প মহলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমেরিকায় স্বাগত জানিয়েছেন, ইএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অতুল কাশ্যপ। তাঁর মতে, এই সফরে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। ভারতীয়-মার্কিন সম্প্রদায়ের সদস্য বিকাশ খান্না জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে, সেই দেশে বসবাসকারী সকল ভারতীয় গর্বিত বোধ করছেন, সম্মানিত বোধ করছেন। ভারত ও আমেরকার মতো দুই গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

Next Article