মস্কো: রুশ তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ মার্কিন ডলারে বেঁধে দিয়েছে জি৭ এবং তার সহযোগী দেশগুলি। এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেনি ভারত। ভারতের এই অবস্থানকে স্বাগত জানাল রাশিয়া। শুধু তাই নয়, নয়া দিল্লিকে বড় মাপের জাহাজ লিজ নেওয়া ও তৈরির বিষয়ে সহায়তা করার প্রস্তাবও দিল মস্কো। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর), মস্কোয় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পবন কাপুরের সঙ্গে বৈঠকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার আলেকজ়ান্ডার নোভাক। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “গত ৫ ডিসেম্বর জি৭ দেশগুলি রুশ তেলের উপর যে মূল্যসীমা বেঁধে দিয়েছে, তা সমর্থন না করার ভারতীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার।”
গত ৫ ডিসেম্বর, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক্সিকিউটিভ বডি তাদের ২৭ সদস্য দেশকে ব্য়ারেল প্রতি রুশ তেলের দাম ৬০ মার্কিন ডলারে বেঁধে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মস্কোর তেল বিক্রির লভ্যাংশ কমানোর পাশাপাশি, বৈশ্বিক তেলের দাম ও সরবরাহকে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্য়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল ইইউ। ৫ ডিসেম্বর থেকেই পশ্চিমী আমদানী এবং বীমা সংস্থাগুলির বেঁধে দেওয়া মূল্যের বেশি মূল্যে রুশ তেল কেনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রুশ তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার পরও, ভারতীয় তেল সংস্থাগুলি মূল্যসীমার বাইরে গিয়েই তেল কিনবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারত সরকার। ৭ ডিসেম্বর, রাজ্যসভায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, দেশের স্বার্থে ভারতীয় তেল সংস্থাগুলি সবথেকে ভাল চুক্তিতেই তেল কিনবে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সংস্থাগুলিকে রুশ তেল কেনার কথা বলিনি। আমরা তেল সংস্থাগুলিকে বলেছি, সবথেকে ভাল বিকল্পের ভিত্তিতে তেল কিনতে। ফলে, এটা নির্ভর করছে বাজারে কে কী প্রস্তাব দিচ্ছে তার উপর। সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতামূলক তেলের উৎস থেকেই তেল কিনবে। এটা বুঝতে হবে যে, আমরা কোনও নির্দিষ্ট একটি দেশ থেকে তেল কিনি না। আমরা বিবিধ উৎস থেকে তেল কিনি। ভারতীয় নাগরিকদের স্বার্থে যেখানে আমরা সবথেকে ভাল প্রস্তাব পাব, সেখান থেকেই তেল কিনব। এটা অত্যন্ত বিচক্ষণ নীতি। আমরা এটাই করার চেষ্টা করছি।”
ইইউ-এর রুশ তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘বাজার-বিরোধী’ বলেছেন রুশ উপমুখ্যমন্ত্রী নোভাক। তাঁর মতে, রুশ তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার ফলে, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হবে এবং বৈশ্বিক শক্তি বাজারের পরিস্তিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “শুধুমাত্র যে উন্নয়নশীল দেশগুলিই যে এই শক্তির অভাবের সমস্যার মুখোমুখি হবে তা নয়, ইউরোপের উন্নত দেশগুলিকেও এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।”