ক্যানবেরা: গত ৪ বছর ধরে খোঁজ চলছে রাজবিন্দর সিং-এর। অস্ট্রেলিয়ায় নার্স হিসেবে কাজ করতেন। সেখানকার পুলিশের দাবি, সে ভারতেই কোথাও আত্মগোপন করে আছে। ২০১৮ সালে, এক অস্ট্রেলীয় মহিলাকে হত্যা করে সে পালিয়েছিল বলে অভিযোগ। সম্প্রতি কুইন্সল্যান্ড পুলিশ বিভাগ থেকে ‘পলাতক’ রাজবিন্দরের তথ্য দিতে পারলে ১০ লক্ষ অস্ট্রেলীয় ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৫.৩ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এর আগে কুইন্সল্যান্ডে আর কোনও অপরাধীর তথ্য পাওয়ার জন্য এত বড় মাপের আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করা হয়নি।
কী ঘটেছিল?
এই ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালে। উত্তর কুইন্সল্যান্ডের বাসিন্দা, ২৪ বছর বয়সী তোয়াহ কর্ডিংলিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল রাজবিন্দর সিং-এর বিরুদ্ধে। তোয়াহ ছিলেন একজন ফার্মেসি কর্মী। কুইন্সল্যান্ডের ওয়ানগেটি সমুদ্রতটে কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে বেড়িয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি কুইন্সল্যান্ড পুলিশের। প্রথমে তিনি নিখোঁজ ছিলেন, পরে ২১ অক্টোবর ওয়ানগেটি সমুদ্রতটে তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছিল।
কে এই রাজবিন্দর সিং?
অস্ট্রেলিয়ার ইনিসফাইল শহরে দীর্ঘদিন ধরে বাস করলেও, রাজবিন্দর আদতে ভারতের পাঞ্জাবের বাটার কালান এলাকার বাসিন্দা। ইনিসফেইলে সে একজন নার্স হিসেবে কাজ করত। তোয়াহ হত্যার দুই দিন পরই সে স্ত্রী, তিন সন্তান, চাকরি সব ফেলে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে পালিয়েছিল। রাজবিন্দর তারপর অমৃতসর বিমানবন্দরে এসেছিল বলে জানিয়েছেন তার ভাই। কিন্তু, তারপর থেকে তার আর কোনও সন্ধান মেলেনি।
নিশ্চিতভাবে ভারতেই আছে
কুইন্সল্যান্ডের পুলিশ জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে পালিয়ে রাজবিন্দর যে ভারতে এসেছিল, সেই বিষয়ে তারা নিশ্চিত। তাদের দাবি, ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস শহর ছেড়েছিল রাজবিন্দর। ২৩ অক্টোবর সে সিডনি থেকে ভারতে উড়ে এসেছিল। সে যে এখনও ভারতেই আছে, সেই বিষয়েও তারা নিশ্চিত বলে জানিয়েছে কুইন্সল্যান্ড পুলিশ।
আসরে সিবিআই
কেয়ার্নসে ইতিমধ্যেই রাজবিন্দরকে ধরার জন্য একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে হিন্দি এবং পঞ্জাবি বলতে পারে এমন পুলিশ আধিকারিকদের রাখা হয়েছে। এই আধিকারিকরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভারতে রাজবিন্দর সিংয়ের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এই বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। কুইন্সল্যান্ড পুলিশের তিন গোয়েন্দা ভারতে এসেছেন। দিল্লিতে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয় হাইকমিশনার জানিয়েছেন, অস্ট্রেলীয় পুলিশ এই মামলার বিষয়ে সিবিআই-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।