পাকিস্তান এক মৃত্যুফাঁদ। ২০১৭ সালে ভারতীয় তরুণীর যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেটাই বোধহয় ওদেশের এক ও একমাত্র বাস্তব। জাফর এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনাই দেখুন না। বালুচ লিবারেশন আর্মির ট্রেন অপহরণের পর কী, কী হয়েছে? সরকারের পাঠানো কফিন দেখে কি আতঙ্কে ভুগছিল সেনার একটা অংশ? নির্দেশ অস্বীকার করে তারা কি ঘটনাস্থল ছেড়ে কিছুটা দুরে গিয়ে চুপচাপ বসেছিল? এলিট ফোর্স পৌঁছনোর পর বিদ্রোহী সেনাদের কি গ্রেফতার করা হয়? তাঁদের কি কোর্টমার্শাল হবে? এমন অনেকগুলো সম্ভাবনা।
অপারেশন জাফর এক্সপ্রেস শেষ হয়নি। বালুচ বিদ্রোহীদের দাবিই হয়তো সত্যি। ঘটনাক্রম-পারিপার্শ্বিকতা সেটাই বলছে। গত শনিবার ফের বিবৃতি দিয়ে বালুচ বিদ্রোহীরা জানায় এ অপারেশনে লজ্জার হার হয়েছে পাক সেনার। ট্রেন থেকে ২১৪ জনকে পণবন্দি হিসাবে হেফাজতে নেয় বালুচ লিবারেশন আর্মি। পাক সেনা, প্রশাসন দাবি না মানায় এদের সবাইকে খুন করা হয়েছে। বালুচ বিদ্রোহীদের দাবি, জাফর এক্সপ্রেসে সেনা অভিযান শুরুর আগেই এই ২১৪ জনকে নিয়ে পাহাড়ের উপরে চলে যায় তাদের মজিদ ব্রিগেডের সদস্যরা। ট্রেনে সেনা অভিযানে সতীর্থদের মৃত্যুর বদলা নিতে এদের খুন করা হয়েছে।
পাক সেনা অপারেশন শেষ হওয়ার দাবি করছে বটে, কিন্তু প্রমাণ নেই। ছবি নেই। অভিযান নিয়ে এত গোপনীয়তাই বা কীসের? এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত সেই উত্তর নেই। তাই বালুচদের দাবিকেই আপাতত সত্যি বলে ধরতে হচ্ছে। বালুচ লিবারেশন আর্মির হামলা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন। অথচ কোনও উত্তর নেই পাক সেনা ও প্রশাসনের কাছে। এই অবস্থায় ভারতের দিকে তির ঘোরাতেই হতো। এবং শাহবাজ শরিফ প্রশাসন সেই পথেই হাঁটে। শরিফের প্রধান উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বলেও দিয়েছিলেন, ট্রেনে সন্ত্রাসের ঘটনায় ভারতের হাত রয়েছে। ভারত খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি।
শুধু বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলে দেন, বিশ্ব জানে, কোন দেশটা সন্ত্রাসের আতুঁড়ঘর। পাকিস্তান আগে ঘর সামলে, তারপর আমাদের দিকে আঙুল তুলুক। সন্ত্রাস ওদের তৈরি ভূত। সেটা এখন ওদেরকেই গিলে খাচ্ছে। তবে, এখানে যেটা বলার, ট্রেনের দখল নিয়ে প্রথমেই মহিলা, শিশুদের মুক্তি দেয় বিএলএ সদস্যরা। পাক সেনা ও পাক পঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা পুরুষরা ছাড়া বাকিরা সবাই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। পাক সেনার বিরুদ্ধে বিএলএ-র লড়াই। আর পাক পঞ্জাবের প্রশাসনের উপরই বালুচদের ক্ষোভ। পাক পঞ্জাবের সরকারই বালুচিস্তানের সম্পদ লুঠ করছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। ঘোষিত দুই শক্র ছাড়া আর কারও গায়ে আঁচড় লাগতে দেয়নি বালুচ লিবারেশন আর্মি।