বাংলাদেশে ধুলোয় লুটোচ্ছে মানবাধিকার। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা! বিষয়টা এখন ওদেশে কার্যত নিষিদ্ধ শব্দের মতো। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতকে বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েই চলেছে বাংলাদেশি নাগরিকদের একটা অংশ। এরই মধ্যে ইউনূস সরকারের হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। কারণ হল, দেশে খাদ্যশস্য উত্পাদনে ঘাটতি। বাড়তি চাল, আলু, পিঁয়াজ, ডিম, সবজি আমদানি না করলে বাংলাদেশের কয়েক কোটি পরিবারে হাঁড়ি চড়বে না। ভারতকে বাদ দিয়ে অন্য দেশ থেকে চাল, সবজি কিনতে কথাবার্তা শুরু করেছিল সে দেশের সরকার।
কোন দেশ চাল, ডাল, সবজি, তেল রফতানি করতে পারবে, তার একটা তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া দিয়েছিলেন অন্তবর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা। গত সপ্তাহে সেই রিপোর্ট খাদ্য উপদেষ্টার মন্ত্রকে জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্ট পড়ে খাদ্য উপদেষ্টার ভিরমি খাওয়ার উপক্রম। ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, পাকিস্তান, মায়ানমার – কোনও দেশই বাংলাদেশের চাহিদা মতো চাল দিতে নারাজ বা দেওয়ার মতো চাল হয়ত তাঁদের হাতেই নেই। একমাত্র তুরস্ক বাংলাদেশের চাহিদা মতো সবই সরবরাহ করতে তৈরি। তবে এর্দোগানের দেশ যে দাম হেঁকেছে, তা বাজার দরের প্রায় তিনগুণ। আর ওই দামের অঙ্ক শুনেই চমকে গিয়েছেন বাংলাদেশের খাদ্য উপদেষ্টা।
ওই দামে চাল কেন? কোনও কিছু কেনাই অন্তবর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থাত্ বিশ্বজুড়ে বাজার করতে বেরিয়েও বাংলাদেশের ব্যাগ এখনও খালিই। তুরস্ক থেকে চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ১৪৫ টাকা গুণতে হবে। ভিয়েতনাম থেকে চাল কিনতে ৮৬ টাকা ও তাইল্যান্ড থেকে কিনতে ৭৮ টাকা দর দিতে হবে। সেখানে ভারত থেকে চাল কিনতে দাম পড়ে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। পেঁয়াজ ও ডিমের ক্ষেত্রে দাম আরও বেশি। বিভিন্ন দেশের কোটেশন হাতে দেখার পর এখন ভরসা বলতে সেই ভারত। গত রবিবারও বাংলাদেশে ১০০ টন চাল পাঠিয়েছে ভারত।
ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ৪টি ট্রাকে করে চাল গিয়েছে বাংলাদেশে। আগামী তিন মাসে আরও ১০০ টন চাল বাংলাদেশ পাঠানোর কথা। ইউনূস প্রশাসন এই পরিস্থিতিতে কী করবে, কী বলবে, অনুমান করাটা কঠিন নয়। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমও বলছে, ভারত থেকে চাল, ডাল কিনলে খরচ কম পড়ে। তাই ভারত থেকেই খাদ্যপণ্য কেনা চালিয়ে যাওয়া উচিত।