ঢাকা: কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশে আন্দোলন চলছে। চলতি সপ্তাহের সোমবার রাত থেকেই এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বেনজির হিংসা ছড়িয়েছে ঢাকা-সহ গোটা বাংলাদেশ জুড়ে। মঙ্গলবার, আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল ৬ আন্দোলনকারীর। হিংসা নিয়ন্ত্রণে বুধবার থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে বৃহস্পতিবারও (১৮ জুলাই), হিংসা নিয়ন্ত্রণে আসা তো দূরের কথা, তার আঁচ যেন আরও বেড়ে গেল। বাংলাদেশের সংবাদপত্র, ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন ঢাকায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী লাঠি ও ঢিল নিয়ে সশস্ত্র পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। যার জেরে বাংলাদেশে এদিন অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে, ঢাকার ১৩ জন আছেন।
নিহতদের মধ্যে হাসান মেহেদী নামে এক সাংবাদিকও আছেন। তিনি ঢাকা টাইমসে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর শরীরে ছররা গুলির ক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে, ঢাকায় এক স্থানীয় ব্যবসায়ী, এক পথচারী এক বাস চালক এবং এক রিকশাচালকেরও মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা সকলেই শিক্ষার্থী বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও সকলের দেহ সনাক্তও করা যায়নি। এদিন সকাল ১১টার পর থেকেই ঢাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও র্যাবের সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এদিকে, ঢাকার রামপুরায় বাংলাদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম, বিটিভি-র প্রধান কার্যালয়েও হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। যার জেরে, এদিন বিকেল থেকে বিটিভি-র সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এদিন, স্থানীয় সময় বিকেল তিনটের দিকে বিটিভি ভবনের প্রধান দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন এক দল আন্দোলনকারী। পরে তাঁরা বিটিভির ভবন চত্বরে থাকা দুটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মধ্যে বিটিভির দফতর ছেড়ে পালান বিটিভির কর্তা–কর্মীরা। এরপরই বাংলাদেশের সরকারি চ্যানেলে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরে, বাংলাদেশি পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
এর মধ্যে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করল বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী, আনিসুল হক জানিয়েছেন, বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সম্ধান বের করতে চাইছে।