ঢাকা: স্বাধীন দেশ হিসেবে ৫৩ বছরে পদার্পণ করল বাংলাদেশ। ৫২ বছর আগে এই ১৬ ডিসেম্বরই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম আর রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধের ফসল পায় বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। তাই এদিন মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদকে স্মরণ করেন তাঁরা। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর তরফেও রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেই সময়ে বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ছাড়াও শহিদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদের সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান-সহ সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে আবার স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এরপর শহিদদের শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি-সহ বিশিষ্টজনরা। পরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য খুলে দেওয়া হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
সম্প্রতি রাজনীতিক হিসেবে অভিষিক্ত হওয়া বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। নিজের জেলা ও নির্বাচনী এলাকা মাগুরায় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। জেলা প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তি ও আওয়ামী লিগের নেতা- কর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বিজয় দিবসে রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল, বিএনপি-র তরফেও বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রায় দু-মাস কোনও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের অনুমতি না পেলেও বিজয় শোভাযাত্রার সরকারি অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। শোভাযাত্রার পর ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তায় বেরোন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পদচারণায় দলটির প্রধান কার্যলয় নয়াপল্টন সরগরম হয়ে ওঠে। তারপর তাঁরা সরকার-বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান-সহ একের পর এক আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। তারপর ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুত্থান ঘটে। তারপর থেকে এই দিনটি বাংলাদেশের বিজয় দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়।