ঢাকা : ভয়াবহ আগুনে পড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে আস্ত লঞ্চ। আর সেই লঞ্চ থেকে উদ্ধার হয়েছে একের পর এক লাশ। মাঝে চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পরিজনকে খুঁজছেন অনেকেই। তাঁরা জীবিত না মৃত, সেটুকু জানতেই হয়রান হয়ে ঘুরছে বহু মানুষ। তাঁদেরই মধ্যে একজন ফাতেমা শাহিদুন। চার দিন ধরে পরিজনের খোঁজ না পেয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি।
সোমবার সকালে তিনি ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে যান অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে। এই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের যে বয়সের কথা তিনি শুনেছেন, তার বড় ছেলের বয়সও সে রকমই। জানা গিয়েছে, ঢাকা থেকে আত্মীয়দের নিয়ে বরগুনার বাড়িতে ফিরছিল তিন ভাইবোন। পথে ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তাঁরা পাঁচজনই। চার দিন ধরে তাদের খোঁজ না পেয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন ৫০ বছর বয়সী ফাতেমা।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা মুজফ্ফর হাওলাদার আর মা আমেনা বেগম সৌদি আরব থাকতেন। সম্প্রতি তাঁরা দেশে ফিরেছেন। তাঁর বাবা-মাকেই আনতে গিয়েছিল তাঁর তিন ছেলেমেয়ে। বড় ছেলে ওবায়দুল (৩০), বড় মেয়ে কুলসুম (২২), আর ছোট মেয়ে আয়শা (১৯)। তাঁরা তাদের নানা-নানিকে নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন। শুক্রবার সকালে তাঁদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তাঁরা কেউ ফেরেনি।
পরে তিনি জানতে পারেন লঞ্চে আগুন লাগার খবর। সেই থেকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের এই প্রিয়জনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য সব জায়গায়। যদিও ৩৩ জনকে শনাক্ত করতে না পেরে গণকবর দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। নিখোঁজদের সন্ধান পেতে চার দিন ধরে অনেকেই ঝালকাঠি শহরে পড়ে রয়েছেন। ঝালকাঠি পুলিশের কাছে নিখোঁজ ৪১ জনের নাম দিয়েছেন তাঁরা। সোমবার ঝালকাঠি পৌর মিনিপার্কে ডিএনএ টেস্টের জন্য নিখোঁজদের পরিজনদের নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে সিআইডি পুলিশ।
‘এমভি-অভিযান ১০’ নামে তিনতলা ওই লঞ্চে প্রায় এক হাজার যাত্রী ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ওই লঞ্চ ঝালকাঠির গাবখানের কাছে সুগন্ধী নদীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আচমকাই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে লঞ্চটি। মাঝ নদীতে এমন বিপদে কেউ কেউ দিশেহারা হয়ে নদীতেই ঝাঁপ দেন। কেউ কেউ আবার মৃত্যুর চোখ চোখ রেখে থেকে যান লঞ্চেই।
আরও পড়ুন : Omicron Variant: আগামী দুই মাসে রাজধানীতে লম্বা লাফ দেবে করোনার সংক্রমণ, আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের