ঢাকা: বাংলাদেশের ঝালকাঠিতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এক যাত্রীবাহী লঞ্চে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ অভিযান–১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তিনতলা ওই লঞ্চে প্রায় এক হাজার যাত্রী ছিল। অভিযান লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট করে জানা না গেলেও লঞ্চের ইঞ্জিনের ঘর থেকেই আগুন লেগেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রকের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্ত উঠে এসেছে, যে লঞ্চটিক ইঞ্জিনে সমস্যা ছিল।
বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রকের সচিব তোফায়েল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “লঞ্চের ইঞ্জিনে আমরা ত্রুটি খুঁজে পেয়েছি।” তদন্তে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, ওই লঞ্চটি যে চালকের চালানোর কথা ছিল দুর্ঘটনার সময় সেই চালক লঞ্চটি চালাচ্ছিলেন না। এই বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি।
নৌপরিবহন দফতরের আধিকারিক মেহবুব রসিদ জানিয়েছেন, অভিযান-১০ লঞ্চের চারজন মাস্টার ও ড্রাইভারের মধ্যে তিনজনের নিয়োগের বিষয়টি মালিক সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানাননি। যাঁর নাম ছিল, তাঁর পরিবর্তে অন্য আরেকজন লঞ্চটি চালিয়েছে। এটা রীতিমতো নিয়ম লঙ্ঘন। তিনি জানিয়ছেন, লঞ্চের মালিক যদি চালক পরিবর্তন করেন, তবে নৌপরিবহন দফতরকে সেটা জানাতে হয়। তদন্তকারী দল জানতে পেরেছে, আগুন লাগার সময় লঞ্চটির প্রধান দরজা বন্ধ ছিল। যে কারণে জ্বলন্ত অবস্থায় লঞ্চটি নদীতীরের কাছে নোঙর করলেও যাত্রীরা প্রধান দরজা দিয়ে বের হতে পারছিলেন না। তাই ভয়ে, আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে যে যেভাবে পেরেছেন, জানালা দিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, আগুন লাগলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সে বিষয়ে লঞ্চের কর্মীদের প্রশিক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনকি অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র থাকলেও সেই যন্ত্র ব্যবহারে পদ্ধতিও জানা নেই লঞ্চের কর্মীদের। ফলে চলন্ত অবস্থায় লঞ্চে আগুন লাগলে হয় পানিতে ঝাঁপ দিতে হবে, নয়তো উদ্ধারকারীদের জন্য অপেক্ষায় থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ঝালকাঠিতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এক যাত্রীবাহী লঞ্চে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ভয়াবহ আগুন লাগে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩৮ জন মারা গিয়েছেন। এখনও অবধি ৮৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, নিখোঁজ ৫১ জন।
আরও পড়ুন Myanmar military: মহিলা-শিশু সহ অন্তত ৩০ জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার, ‘জঙ্গি-হত্যা’ বলছে মায়ানমার সেনা
আরও পড়ুন Bangladesh News: উর্দিধারী পুলিশ শাসকদলের বাহিনীতে পরিণত হয়েছে, অভিযোগ বিএনপির