ঢাকা: ইলিশ মাছ ছাড়া বাঙালির বাঙালিয়ানা যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ওপার বাংলার ইলিশের স্বাদ, গন্ধ এপারে থাকা বাঙালিদেরও বারবার মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের জেলেদের বক্তব্য নিঃসন্দেহে ইলিশ-প্রেমী বাঙালিদের মন ভাল করার জন্য যথেষ্ট। বাংলাদেশের জেলেরা জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবার চার থেকে পাঁচগুণ বেশি ইলিশ উঠেছে। বাংলাদেশের জেলেরা জানিয়েছেন, জালে ওঠা ইলিশ মাছগুলি আকারেও বড় এবং ওজনও বেশি। জেলেদের মধ্যে কেউ কেউ জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর আগে যেখানে সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ মন ইলিশ উঠত এখন সেখানে ২০ থেকে ২৫ মন ইলিশ উঠছে। জালে বিপুল পরিমাণ ইলিশ ওঠায় স্বাভাবিকভাবেই জেলেরা খুশি।
অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হওয়ার কারণে মনে করা হয়েছিল যে এবার ইলিশের জোগান কমবে। কিন্তু ২৩ জুলাই থেকে ট্রলার ভর্তি ইলিশ আসায় জেলেদেরে পাশাপাশি ব্যবসায়ী থেকে আড়তদার সকলেই খুশি। ব্যবসায়ীদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ইলিশ মাছগুলি আকারে বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ করার কারণে জেলেরা অনেক বেশি ইলিশ পেয়েছেন। অনেকে আবার এর জন্য সরকারি সহায়তার ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। বাংলাদেশ মৎস্য দফতর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ২০০১-০২ সালে বাংলাদেশে যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন সেখানে ২০২০-২১ সালে সেটা ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে।
গবেষকদের মতে, মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার কারণে ইলিশের প্রজননও অনেকটাই বেড়েছে। মৎস্য দফতরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, এ বছর ইলিশের প্রজনন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৫ সাল থেকে বাণিজ্যকি ট্রলার গুলির ক্ষেত্রে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছিল। এবার বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ার কারণে ওপার বাংলার পাশাপাশি এপার বাংলাতেও বাংলাদেশের ইলিশের জোগান অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।