নয়া দিল্লি: প্রতিবেশী দেশের প্রতি ফের একবার সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে ভারত(India)। করোনাকালে জীবনদায়ী ওষুধ ও ভ্যাকসিন দিয়ে বাংলাদেশ(Bangladesh)-কে সাহায্য করেছিল ভারত। এবার দেশের অভ্য়ন্তরে ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা মজবুত করতে ট্রেনের বিভিন্ন সরঞ্জামও পাঠানো হবে। বাংলাদেশের রেলওয়ের সিগন্যালিং (Railway Signaling System) ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে ভারতের তরফে লোকোমোটিভ ও প্যাসেঞ্জার কামরা পাঠানো হবে। এছাড়াও আধুনিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জামও পাঠানো হবে।
কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই বাংলাদেশের হাই কমিশনার মহম্মদ ইমরান কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণের সঙ্গে দেখা করেন। দুই দেশের রেলমন্ত্রী আন্তর্জাতিক রেল সংযোগ ব্য়বস্থা নিয়ে কথা বলেন। পরিকাঠানোগত উন্নয়ন ও বাংলাদেশের ট্রেনগুলিতে যাত্রী সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
মহম্মদ ইমরান জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে সংযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আখাউরা-লাকসাম সেকশনের রেল সংযোগ উন্নত করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের হাই কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের অন্দরে রেল সংযোগ আরও মজবুত করতে ভারতের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
ভারতের তরফেও জানানো হয়েছে, লোকোমোটিভ, ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট ট্রেন, মেইনলাইন ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট ট্রেন পাঠানো হবে। এছাড়াও প্যাসেঞ্জার বগি ও রেলওয়ের সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আধুনিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে।
রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়াও বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে হাইড্রোপাওয়ার শক্তি উৎপাদন ও তার ব্যবহার বাড়ানোর উপরও জোর দেওয়া হয় এই বৈঠকে। রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল প্রকল্প ও ট্রান্স-ন্যাশনাল পাওয়ার সংযোগের ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলদেশের যৌথ সহযোগিতায় “বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি” ১৩২০ মেগা ওয়াটের একটি কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। ভারতের ন্যাশনাল থাীর্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন ও বাংলাদেশের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ৫০ শতাংশ অংশীদারিত্বে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালন করবে। ২০১৭ সালে এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং চলতি বছর থেকেই এই বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবে বলে জানানো হয়েছে। এটিই বাংলাদেশের বৃহত্তম কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হতে চলেছে।
গত বছরের অগস্ট মাস থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ফ্রেইট ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি রুটের মধ্যে ফ্রেইট ট্রেন চলাচল শুরু করেছে। ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সময় এই রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে পাঁচটি লাইন চালু করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০২০ সালে ভারতের তরফে বাংলাদেশে ১০টি ডিজেল লোকোমোটিভ ইঞ্জিন পাঠানো হয়।