ঢাকা : বাংলাদেশ পুলিশের ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (ব়্যাব) হাতে গ্রেফতার জেএমবির এক শীর্ষ নেতা। রাজধানী ঢাকা সংলগ্ন মহম্মদপুরের বসিলায় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন ব়্যাবের জওয়ানরা। বৃহস্পতিবার সকালে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি ইমরান খান সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ধৃত জঙ্গির নাম ইমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার।
এর আগে ময়মনসিংহের খাগডহ এলাকা থেকে চার জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ওই চার জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই বসিলায় জঙ্গিদের গোপন ডেরার খবর পান আধিকারিকরা। জেরায় ধৃতরা জানিয়েছিল, বসিলার ওই গোপন ডেরায় জেএমবির এক শীর্ষ নেতা গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই আজ সকালে বসিলা থেকে জেএমবি নেতাকে গ্রেফতার করে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন।
ধৃত জঙ্গিদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জামালপুর ও রাজশাহীতেও অভিযান চালানো হয়েছিল। এরপর গতকাল প্রায় মধ্যরাত থেকে বসিলায় অভিযান শুরু করে ব়্যাব। জেএমবি ডেরার আশেপাশের এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন তাঁরা। ওই এলাকার অন্যান্য বাড়িগুলির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাকা হয় ডগ স্কোয়াড, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল, ফরেন্সিক টিমকে। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। দীর্ঘক্ষণ অভিযান চালিয়ে আজ সকাল ৯ টা নাগাদ উজ্জ্বল মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়।
যে বাড়িটি থেকে জেএমবি নেতা উজ্জ্বল মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেখান থেকে পিস্তল, গুলি, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও বেশ কিছু রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়েছে। আনুমানিক তিন লাখ টাকাও উদ্ধার করেছে ব়্যাব। পাওয়া গিয়েছে বেশ কিছু ‘জিহাদি’ বই।
গ্রেফতার হওয়া জেএমবি নেতাকে ব়্যাবের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জেএমবি গোষ্ঠীতে ধৃতের কী ভূমিকা ছিল, সে কোন পদে রয়েছে, এমন একাধিক বিষয় এখনও অধরা। প্রাথমিকভাবে ব়্যাবের অনুমান, উজ্জ্বল মাস্টার জেএমবি গোষ্ঠীর এক শীর্ষ নেতা। সূত্রের খবর, এর আগে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার হওয়া চার জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, উজ্জ্বল মাস্টার সম্পর্কে এমনই তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তবে এই বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাইছেন না ব়্যাবের আধিকারিকরা।
এদিকে ওই বাড়িটির নিরাপত্তীরক্ষীর থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২ তারিখ ওই বাড়িটি দু’জন ভাড়া নিয়েছিল। ভাড়া নেওয়ার সময় তারা বলেছিল, দু’জনেই প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করে। বাড়ি ভাড়ার জন্য হাজার পাঁচেক টাকা অগ্রিমও দিয়েছিল এবং দিনকয়েক পর পরিবারের বাকি সদস্যদেরও নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছিন।
তবে ওই দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি কোনও পরিচয়পত্র জমা দেয়নি ভাড়া নেওয়ার সময়। দিনকয়েক পর পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে আসার সময় পরিচয়পত্র জমা দেবে বলে জানিয়েছিল। ওই দুই ব্যক্তি কে ছিল, ধৃত উজ্জ্বল মাস্টার কি তাদের মধ্যেই একজন ? নাকি অন্য কেউ ? তাহলে যারা বাড়ি ভাড়া নিয়েছে, তারা কারা ? এমনই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন : ‘বন্ধু’ তালিবদের ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য পাঠাচ্ছে বেজিং