‘বন্ধু’ তালিবদের ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য পাঠাচ্ছে বেজিং
China : আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে ২০ কোটি ইয়ানের (৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার) সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং।
কাবুল : আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন করেছে তালিবান। তবে অন্তবর্তীকালীন এই সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনও বেশ ধন্দে রয়েছে বিশ্বের কূটনৈতিক মহল। মার্কিন মুলুক জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনওরকম তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না। এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই তালিব সরকারের পাশে দাঁড়াল বেজিং। মোল্লা হাসান আখুন্দের সরকারকে ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শি জিনপিং।
এমনটা যে হতে পারে, তার অনুমান আগে থেকেই করছিলেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ১৫ অগস্ট তালিবরা কাবুলের দখল নেওয়ার পরই চিন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বেজিং থেকে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে যে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল (আশরাফ গনির আমলে) তা থেকে মুক্তির জন্য এই পদক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী। তালিবানও জানিয়েছে, তাদের সরকারের সবথেকে বড় অংশীদার হতে চলেছে চিন। আর তারপর এই ঘটনা যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, তা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন অনেকেই।
বুধবার আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে ২০ কোটি ইয়ানের (৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার) সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং। এর মধ্যে রয়েছে, শস্য, শীতকালীন সামগ্রী, টিকা, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। নতুন তালিবান সরকারে প্রাথমিক সাহায্য হিসেবে কাবুলে করোনা টিকার ৩০ লাখ ডোজ় পাঠাবে চিন। বৈঠকের আহ্বায়ক ছিল পাকিস্তান। চিন এবং পাকিস্তান ছাড়া ইরান, তাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তবে রাশিয়ার কোনও প্রতিনিধিত্ব ওই বৈঠকে ছিল না।
এদিকে তালিবদের পাশে দাঁড়ানোর পিছনে বেজিংয়ের ব্যক্তিগত স্বার্থ লুকিয়ে রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে আমেরিকা। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিনকে একহাত নিয়ে বলেছিলেন, “তালিবানের সঙ্গে সত্যিই সমস্যা রয়েছে চিনের। ওরা নিশ্চয়ই চাইবে, তালিবানের সঙ্গে কোনওরকম সমঝোতায় আসার। এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত। একইভাবে পাকিস্তান ও রাশিয়াও চেষ্টা চালাবে। ওরা সকলেই কী করা উচিত, তা বোঝার চেষ্টা করছে।”
আফগানিস্তানকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে তালিবান যে বেজিংয়ের উপরই নির্ভর করে রয়েছে, তা আগেই বকলমে স্বীকার করে নিয়েছিলেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ। বলা হয়েছিল, পাক অধিকৃত কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত প্রস্তাবিত সড়ক-সহ গোটা বিশ্বকে সড়কপথে জুড়তে যে পরিকল্পনা চিনের রয়েছে, সেটা তারা সমর্থন করে। তালিবানি মুখপাত্রের মুখে শোনা গিয়েছিল, “চিনই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের জন্য চিন অসাধারণ সব সুযোগ প্রস্তুত করেছে। কারণ আমাদের দেশ এই মুহূর্তে বিনিয়োগ এবং পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তুত।” শেষে হলও তাই। অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান সরকার গঠনের পরই তাদের ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য পাঠাচ্ছে চিন।
আরও পড়ুন : ‘চিন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার’, আর্থিক দুর্দশা ঘোচাতে মস্কো-বেজিংয়ে আস্থা তালিবানের