‘চিন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার’, আর্থিক দুর্দশা ঘোচাতে মস্কো-বেজিংয়ে আস্থা তালিবানের

সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে তাদের ত্রাতা হয়ে এগিয়ে এসেছে চিন। সেই কথা স্বীকার করেছে তালিবান নিজেই।

'চিন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার', আর্থিক দুর্দশা ঘোচাতে মস্কো-বেজিংয়ে আস্থা তালিবানের
ছবি-Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 8:11 PM

কাবুল: প্রায় সব দেশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের থেকে। এদিকে দেশে নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। সরকার চালাতে এবং দেশের অগ্রগতি করতে টাকা দরকার। প্রয়োজন বিদেশি বিনিয়োগও। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউই তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য করতে বা বিনিয়োগে আগ্রহী নয়। প্রত্যাশিতভাবেই, এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে তাদের ত্রাতা হয়ে এগিয়ে এসেছে চিন। সেই কথা স্বীকার করেছে তালিবান নিজেই। তালিবানের পক্ষ থেকে চিনকে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার’ (অংশীদার) হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

আফগানিস্তানকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে তালিবান যে বেজিংয়ের উপরই নির্ভর করে রয়েছে, সেটা বকলমে স্বীকার করে নিয়েছেন তালিবানি মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ। তালিবানের স্পষ্ট বার্তা, পাক অধিকৃত কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত প্রস্তাবিত সড়ক-সহ গোটা বিশ্বকে সড়কপথে জুড়তে যে পরিকল্পনা চিনের রয়েছে, সেটা তারা সমর্থন করে। তালিবানি মুখপাত্রের কথায়, “চিনই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের জন্য চিন অসাধারণ সব সুযোগ প্রস্তুত করেছে। কারণ আমাদের দেশ এই মুহূর্তে বিনিয়োগ এবং পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তুত।” এক ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানানো হয়েছে তালিবানের পক্ষ থেকে।

আরও একধাপ এগিয়ে চিনকে আকণ্ঠ ধন্যবাদও জানিয়েছে তালিবান। কারণ, বেজিংই নাকি আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদের খনি নতুন করে সচল করবে, এবং গোটা বিশ্বে রফতানিও তাদের পক্ষ থেকেই করা হবে। জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, “আমাদের দেশে সমৃদ্ধ তামার খনি রয়েছে। যা চিনের জন্যই নতুন করে চালু করা যাবে এবং আধুনিকীকরণ করা সম্ভব হবে। চিনকে ধন্যবাদ। উপরন্তু, চিনের মাধ্যমেই আমরা গোটা বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রাখব।”

সূত্রের খবর, তালিবান কাবুল দখল নেওয়ার আগে থেকেই চিন তাদের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রেখেছিল। এখন সেই গোপন ঘনিষ্ঠতাই প্রকাশ্যে এনেছে তালিবান। চিনও ক্রমশ তা প্রকাশ করবে বলেই মত কূটনৈতিক মহলের। তালিবানও আশা করছে, বাকি দেশগুলি মুখ ফেরালেও চিন হয়তো বিনিয়োগ করে আর্থিক দুরাবস্থা থেকে তাদের উদ্ধার করবে।

বেজিং যে তালিবান এবং আফগানিস্তান, উভয়ের ক্ষেত্রেই নরম মনোভাব নিয়ে চলছে, সেটা অবশ্য লুকিয়ে রাখা হয়নি। বুধবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়নবিন জানান, চিন আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে এবং এই ক্ষেত্রে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই বিবৃবিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আফগানিস্তানের সমগ্র নাগরিকদের’ সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে চলবে চিন। যা পরোক্ষে তালিবানকেও বন্ধু হিসেবে দেখানো বলেই মত কূটনৈতিক মহলের।

তবে শুধু চিন নয়, রাশিয়ার প্রতিও বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে রেখেছে তালিবান। জাবিউল্লাহ বলেছেন, আমরা রাশিয়াকেও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে গণ্য করি। মস্কোর সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখা হবে। আরও পড়ুন: আফগান সরকার চলবে এই তিন তালিবান নেতার অঙ্গুলিহেলনে! প্রধানমন্ত্রীর আসনে বরাদরই