ঢাকা: বলতে গেলে তারা ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জার’, ভারত থেকে নিয়মিত বাংলাদেশে যায়। সঙ্গে মালপত্রের ভিতর থাকে গরেক রকমের পণ্য। আর তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে মদের বোতল। ওই সকল পণ্য ও মদ বাংলাদেশিদের কাছে পৌঁছে আবার ভারতে ফিরে আসে তারা। এই ভাবেই বাংলাদেশে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পৌঁছে যাচ্ছে প্রচুর বিদেশি মদ। এমনটাই দাবি, বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের। আর সেই মদ বিক্রি হচ্ছে, গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো ঢাকার অভিজাত এলাকার ক্রেতাদের কাছে। এর ফলে, লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশি সরকারের। তবে, মদের বোতলগুলি ভারতীয়রা পৌঁছে দিলেও, এই মদ পাচারের মাথারা বাংলাদেশের নাগরিক বলেই জানিয়েছে বাংলাদেশি পুলিশ।
সম্প্রতি, ঢাকায় ৫২ বোতল বিদেশি মদ-সহ একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে বাংলাদেশি পুলিশ। সেই গাড়িতে ছিল দুই ভারতীয় নাগরিক। তাঁদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার পর, পুলিশ দেখে গত ৮ মাসে ৪০ বারের বেশি বাংলাদেশে যাতায়াত করেছেন ওই দুই ব্যক্তি। পুলিশের দাবি, তাদের মতো প্রতিদিন ৪০-৫০জন ভারতীয় নাগরিক ট্রেনে করে বাংলাদেশে এসে, অবৈধভাবে বিদেশি মদের বোতল পাচার করছে। তবে, পুলিশের দাবি, এই চক্রটিকে ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই, চক্রের মাথাদের গ্রেফতার করা হবে।
এই পাচারের ফলে ঠিক কতটা ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের? বাংলাদেশে বিদেশি মদ আমদানির জন্য ৫৯৬ থেকে ৬১১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। অর্থাৎ, এক লিটার বিদেশি মদের দাম যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে বাংলাদেশে সেই বোতলের দাম দাঁড়াবে ৭০০ টাকারও বেশি। বিনা শুল্কে মদ কেনার সুযোগ পান কূটনীতিকরা। এর জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, সেই ব্যবস্থাতেও দুর্নীতি রয়েছে। শুল্কমুক্ত মদ অবৈধভাবে বাইরে বিক্রি করা হত বলে অভিযোগ ওঠায়, বছর দুয়েক আগে বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোতে মদ আমদানি ও বিক্রির তথ্য সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ফলে, কূটনীতিকদের জন্য আনা বিদেশি মদ বাইরে বিক্রি প্রায় বন্ধ। এই অবস্থায়, ভারত থেকে এইভাবে মদ পাচারের রাস্তা বেছে নিয়েছে অবৈধ ব্যবসায়ীরা।