চট্টগ্রাম: দিন যত গিয়েছে বিজ্ঞানের অগ্রগতি বেড়েছে। আমরা ক্রমশই প্রযুক্তিকে হাতিয়ায় করে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেলেও আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাদের মন থেকে এখনো কুসংস্কার দূর হয়নি। তাদের মনের এই দুর্বলতাকে ব্যবহার করে একদল অসাধু ব্যক্তি নিজেদের কার্যসিদ্ধি করছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে মানুষের কুসংস্কারের মাশুল দিতে হয়েছে এক স্কুল ছাত্রীকে। ওই স্কুলমছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আশিকুল ইসলাম নামের এক মসজিদের মুয়াজ্জিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূত তাড়ানোর নাম করে আশিকুল নামের ৩৪ বছর বয়সী ওই মুয়াজ্জিন স্কুলছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে দারোগারহাট রোড এলাকা থেকে আশিকুলকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার পুলিশ। গ্রেফতারির কথা স্বীকার করেছেন সদরঘাট থানার ওসি খায়রুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, স্কুল ছাত্রী মেয়েটির বাবার থেকে অভিযোগ পেয়ে ওই মুয়াজ্জিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে বিশেষ ধরনের ভূত ‘জিন’ মেয়েটির ওপর ভর করেছে, এই কথা বলে তাঁর যৌন হেনস্থা করেছিল আশিকুল।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সদরঘাট থানার ওসি এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “দারোগাহাট রোডের বাসিন্দা দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিল। তিন মাস ধরে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেও, অসুস্থতা কমার কোনও লক্ষণ ছিল না। স্থানীয় এক ব্যক্তির পরামর্শে মেয়েটির বাবা তাঁকে আশিকুলর কাছে নিয়ে যায়। মেয়েটিকে দেখেই মসজিদের মুয়াজ্জিন বলে, তাঁকে জিনে ধরেছে এখনই ঝাড়ফুঁক না করা হলে দু-তিন দিনের মধ্যে মেয়েটির মৃত্যু হবে।” পুলিশ জানিয়েছে স্কুলছাত্রীর বাবার কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা চেয়েছিল আশিকুল। মেয়েটির বাবা প্রাথমকিভাবে ১০ হাজার টাকা নগদ দিয়েছিলেন।
ঝাড়ফুঁকের নামে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় আশিকুল। সেখানেই অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। বুঝতে পেরে মেয়েটির বাবা স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশে খবর দিয়েছিল। পুলিশ এসে আশিকুলকে গ্রেফতার করে।