ঢাকা : ভারত বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবার আরও মজবুতের পথে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন তিনি। আর আজ সেই সফরের প্রথম দিনেই রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠক করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারত বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলি এবং বহুমুখী যে চুক্তিগুলি রয়েছে, সেগুলি বর্তমানে কতটা গতিতে এগোচ্ছে, তা নিয়ে পর্যালোচনায় বসেন হাসিনা-কোবিন্দ।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি আজ জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের। বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণাও করেন কোবিন্দ এবং শেখ হাসিনার মধ্যে। মৈত্রী দিবস যে এই বছর দুই দেশ একসঙ্গে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে উভয়েই খুশী।”
এর আগে বুধবার সকালে বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। আজ বাংলাদেশের হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাঁকে গার্ড অব ওনার প্রদান করা হয়।
সফরের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। দুপুরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে যান। আগামিকাল, ১৬ ডিসেম্বর প্য়ারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ অতিথি হিসাবে যোগ দেবেন।
১৬ তারিখের বিকেলে সংসদ ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করবেন এবং ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ নামক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য রাখা মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে উপহার হিসাবে দেওয়া হবে। রাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে এক সোনালি অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে কিছুদিন আগেই মন্তব্য করেছিলেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। এর আগে মুজিব শতবর্ষের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উল্লেখ করেছিলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সামিল হয়েছিলেন তিনি। ঢাকায় মুজিব শতবর্ষে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্মৃতিচারণায় বলেছিলেন,জীবনের শুরুর দিকে আন্দোলনগুলির অন্যতম ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে সামিল হওয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক আজকের নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। আর শুধু সম্পর্কই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাঁর অংশগ্রহণও ছিল বলে দাবি করেন মোদী।