ঢাকা: এ যেন জ্বলন্ত চিতা! আগুন যেন নিভতেই চাইছে না। শনিবার রাতে বাংলাদেশের চ়ট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিধ্বংসী আগুন লাগে কন্টেনার ডিপোয়। রাসায়নিক ড্রামে বিস্ফোরণ থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা কারখানায়। শনিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছিল উদ্ধারকাজ। রবিবার সারা রাত ধরে উদ্ধারকাজ চলার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীও। উদ্ধারকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার ৩০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও ডিপোর ভিতর থেকে আগুনের হলকা ও সাদা ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কতক্ষণ সময় লাগবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ চট্টগ্রামের ওই কন্টেনার ডিপোয় আগুন লাগে। ডিপোর ভিতরে রাসায়নিক ভর্তি প্রচুর ড্রাম রাখা ছিল। সে কারণেই একের পর এক বিস্ফোরণ হতে থাকে এবং আগুন আরও সরিয়ে পড়ে। বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে আহতদের চট্টগ্রামের মে়ডিক্যাল কলেজ সহ আশেপাশের একাধিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও অবধি কমপক্ষে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২০০-রও বেশি মানুষ।
দমকল বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, লাগাতার উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। তবে আগুন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে, সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল রাত থেকে দমকলের ১২টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ করছে। জল শেষ হয়ে গেলে, আরও ইঞ্জিন আনানো হবে। তবে ভিতরে দাহ্য় জ্বালানি পদার্থ থাকায় বারংবার বিস্ফোরণ হচ্ছে। সেই কারণে ডিপোর ভিতরে এখনও ঢোকা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের দমকল বিভাগের কর্তা দুলাল মিঞা বলেন, “এখনও অবধি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ভিতরে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ থাকায়, আগুন নেভাতে আরও সময় লাগবে। ডিপোর কেবল সামনের অংশটুকুতেই কোনওমতে ঢুকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫০০ মিটারের বেশি ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। সেখান থেকে এখনও ধোঁয়া বের হচ্ছে। অর্থাৎ সেখানে এখনও আগুন জ্বলছে। রাসায়নিক ভর্তি কন্টেনারগুলি সরানো গেলে, তবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।”
রবিবার রাতেও দেখা যায়, দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে ওই ডিপোয়। আশেপাশে বেশ কয়েকটি কন্টেনারেও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। দমকল, পুলিশ ও সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। দুর্ঘটনার পর থেকে যারা নিখোঁজ, তাদের খোঁজ ডিপো ও হাসপাতালের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।