ঢাকা : স্ত্রী থাকে বাংলাদেশে। স্বামী রয়েছে দুবাইতে। কিলোমিটারে তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেকটা বেশি। কিন্তু এই দূরত্বের আড়ালে চলছে দিনের পর দিন অবৈধ ব্যবসা। চাকরি দেওয়ার নাম করে নারী পাচারের ব্যবসা করত তারা। এই ছকের শিকারি এক মহিলার বিষয়ে জানতে পেরে বাংলাদেশের ব়্যাব সক্রিয় হয়। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত স্ত্রী অনামিকা আক্তার কাকলি (২৩) নামের যুবতীকে দক্ষিণ কেরানিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ব়্যাব-৩। এরপরই গোটা ঘটনা সামনে আসে।
অভিযুক্তকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকবছর ধরেই এই চক্র চলছে। অভিযুক্ত স্ত্রী অনামিকা বাংলাদেশে বেকার যুবতীদের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। তাঁদের উচ্চ বেতনে ডান্স বারে চাকরি দেওয়ার কথা বলত। তারপর অভিযুক্তের স্বামী সেইসব যুবতীদের জন্য দুবাই থেকে টিকিট ও ভিসা পাঠানোর ব্যবস্থা করত। সেইসব খরচই বহন করত এই দুই পাচার চক্রী। তারপর সেই যুবতীরা দুবাই গেলে তাঁদের বিভিন্ন অসাধু কাজে লাগিয়ে সেই খরচ তুলে নিত বলে জানা গিয়েছে। ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই যুবতীদের দুবাইতে নিয়ে যাওয়া হত। উচ্চ বেতনের চাকরির আশায় দুবাই গিয়ে হতাশ হতেন সেই যুবতীরা। ডান্স বারে ভাল বেতনের চাকরির বদলে বিভিন্ন হোটেলে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করা হত বলে অভিযোগ। এই পাচার-চক্রীর কথায় হ্যাঁ-তে হ্যাঁ না মেলালে মিলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
র্যাব-৩ ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জানিয়েছেন যে, স্বামী রফিকুল ইসলাম রানা (৩৪) ও স্ত্রী অনামিকা আক্তার কাকলী (২৩) গত দুই বছর ধরে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এই দুই বছরে তারা ৪০ জন যুবতীকে দুবাই পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে কাকলি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন যে, এই জালে পড়ে এক যুবতী গত নভেম্বর মাসে দুবাই গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি অন্যরকম দেখে সবটা বুঝে যান তিনি। তারপর দেশে ফিরতে চান তিনি। তখন ওই যুগল তাঁকে আটকে রেখে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে। এই তথ্য় জানতে পেরেই বাংলাদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত কাকলিকে। তার বিরুদ্ধে যাত্রীবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।