UK institutional racism: গ্লাভসে দাড়ি বাঁধা, প্রস্রাবে মাখামাখি শরীর! ব্রিটেনে চরম বর্ণবিদ্বেষের শিকার শিখ রোগী

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Oct 02, 2023 | 11:12 PM

UK institutional racism:

UK institutional racism: গ্লাভসে দাড়ি বাঁধা, প্রস্রাবে মাখামাখি শরীর! ব্রিটেনে চরম বর্ণবিদ্বেষের শিকার শিখ রোগী
প্রতীকী ছবি
Image Credit source: Twitter

Follow Us

লন্ডন: ব্রিটিশ হাসপাতালগুলির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে রয়েছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবিদ্বেষ’। অর্থাৎ, ব্যক্তিগতভাবে কোনও একজন নার্স বা চিকিৎসক নয়, হাসপাতালগুলিতে প্রতিষ্ঠানগতভাবেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন কৃষ্ণাঙ্গ বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। গুরুতর অভিযোগ উঠল ব্রিটিশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। যে দেশে বর্তমানে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতই প্রধানমন্ত্রী, সেই দেশেই নার্সদের চরম দুর্ব্যবহার সহ্য করতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিখ সম্প্রদায়ের এক মৃত্যুপথযাত্রী রোগী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে, প্লাস্টিকের গ্লাভস দিয়ে ওই রোগীর দাড়ি বেঁধে রেখেছিল নার্সরা। তাঁর শয্যা প্রস্রাবে ভেসে গেলেও পরিষ্কার করা হয়নি। নিজের প্রস্রাবের মধ্যেই ফেলে রাখা হয়েছিল তাঁকে। শিখ ধর্মে খাওয়া নিষেধ, এমন খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। যার জন্য প্রায় না খেয়েই থাকতে হয়েছে তাঁকে। সবথেকে বড় কথা, মৃত্যুশয্যায় থাকা অবস্থায় গুরুতর বৈষম্যের অভিযোগ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। তারপরও, অভিযুক্ত নার্সদের তাদের পদ থেকে সরানো হয়নি।

ব্রিটেনের নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের একটি ডসিয়ের ফাঁস হয়ে এই গুরুতর ঘটনাটি সামনে এসেছে। আর তাতেই মুখোশ খুলে গিয়েছে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার। সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর, এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে কাউন্সিল। তবে, পরিচয় গোপন রেখে কাউন্সিলের এক সদস্য দাবি করেছেন, ২০০৮ সালেই প্রথম ব্রিটিশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নার্স এবং রোগীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছিল। কৃষ্ণাঙ্গ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নার্স এবং রোগীদের বিরুদ্ধে কী দরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, সেই বিষয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। তারপর ১৫ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু, এই ‘প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবিদ্বেষের’ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল। বরং, নিজস্ব বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে অসংলগ্ন নির্দেশিকা জারি করে, এই বর্ণবিদ্বেষকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দিয়েছে কাউন্সিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ওই রোগী বা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কোনও বিবরণ দেওয়া হয়নি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই শিখ রোগীর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছিল নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার কিনা, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বে ছিল যে ব্যক্তিরা, তাঁরা ওই মৃত শিখ রোগীর অভিযোগকে গুরুত্বই দেয়নি। রোগীর মৃত্যুর পরই ওই লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন। জানা গিয়েছে, নোটটি পঞ্জাবি ভাষাতে লিখেছিলেন ওই হতভাগ্য ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, নার্সরা তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করত। তারা জানত, শিখ ধর্মে কোন কোন খাওয়া বারণ। ইচ্ছা করে তারা সেই খাবারগুলিই দিত তাঁকে। তিনি তা খেতে পারতেন না। ফলে, অধিকাংশ সময় অনাহারেই থাকতে হত তাঁকে। তিনি নার্সদের ডাকার জন্য বেল বাজালে, কোনও নার্স আসত না। ফলে তিনি শুয়ে শুয়েই প্রস্রাব করে ফেলতেন। আর ওই প্রস্রাব মাখামাখি হয়েই তাঁকে শুয়ে থাকতে হত দীর্ঘক্ষণ।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, ব্রিটেন জুড়ে ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবিদ্বেষ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। ঋষি সুনকের দেশ কি এবার বর্ণবিদ্বেষের কালো ইতিহাসকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে? এখন সেটাই দেখার।

Next Article