ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি মহিলা, কেটে বাদ দিতে হল দুই পা, হাত হয়ে গেল কালো
British Woman with flu-like symptoms: ফ্লু-এর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ব্রিটিশ মহিলা। কী এমন ঘটল যে বাদ দিতে হল তাঁর দুই পা, হাত হয়ে গেল কালো।
লন্ডন: ভারতে ক্রমে ভয়াল রূপ নিচ্ছে ইফ্লুয়েঞ্জা। তারমধ্য়েই এক ফ্লু-এর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক ব্রিটিশ মহিলার মর্মান্তিক পরিণতির খবর সামনে এল। রাতারাতি নাটকীয়ভাবে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পর, বর্তমানে ওই মহিলার দুই পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর হাতের আঙুলগুলিও কালো হয়ে গিয়েছে, ব্যবহার করতে পারছেন না। তবে, আশার কথা হল, ক্রমে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। তাঁর পরিবারের আশা, দ্রুতই বাড়ি ফিরে আসবেন তিনি। কিন্তু কেন তাঁর এরকম পরিণতি হল? জেনে নেওয়া যাক পুরো ঘটনাটা।
এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ক্রিসমাসের সময়। কোভিড মহামারির কারণে বেশ কয়েক বছরের বিরতির পর, মা, বাবা এবং ভাইবোনদের সঙ্গে একসঙ্গে পারিবারিক উদযাপনে মেতেছিলেন জুলিয়ানা ব্র্যান্সডেন। ৪৪ বছরের জুলিয়ানা ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। ওই দিনই শারীরিক অস্বস্তি বোধ করছিলেন তিনি, কিন্তু প্রাথমিকভাবে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু, নতুন বছরের প্রাক্কালে, জুলিয়ানার শরীরের অনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। দুদিনের মধ্য়েই নাটকীয়ভাবে তাঁর শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হয়। জুলিয়ানার স্বামী টিম জানিয়েছেন, বালিশ থেকে মাথা তোলার ক্ষমতা ছিল না জুলিয়ানার। মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে তার হৃদযন্ত্র দুইবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এই অবস্থায় টিম জুলিয়ানাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। টিম জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা তাঁদের জানিয়েছিলেন যে, জুলিয়ানার যে কতটা অসুস্থ, তা তাঁকে বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়েছিলেন জুলিয়ানা। চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছিলেন, তাঁর ‘সেপসিস’ হয়েছে, তাঁকে ভেন্টিলেটরের সহায়তা দিতে হবে। সেই সঙ্গে ছিল তীব্র ডিহাইড্রেশন বা জলহীনতা। স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১০ লিটার জল কম ছিল তাঁর শরীরে। এরপর ৬৬দিন ধরে আইসিইউতে যুদ্ধ করেছেন জুলিয়ানা। এর মধ্যে বহুবার সেপটিক শকের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে জ্ঞান ফিরলেও, সেপসিসে তাঁর হাত ও পায়ের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল। তাঁর প্রাণ রক্ষা করতে চিকিৎসকরা তাঁর দুই পায়েরই হাঁটুর নীচ থেকে অস্ত্রোপচার করে বাদ দিয়েছেন। চিকিৎসকদের আশঙ্কা জুলিয়ানাকে তাঁর হাতেরও বেশিরভাগ আঙুলই খোয়াতে হবে। কারণ, সেগুলিও সেপসিসে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে।
তবে, এত কিছুর পরও জুলিয়ানার আত্মবিশ্বাস এবং চারিত্রিক দৃঢ়তা এতটুকু টাল খায়নি। আর তাঁকে দেখেই আশাবাদী তাঁর পরিবারও। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাঁর অবস্থা এখনও অনেকটাই স্থিতিশীল। জুলিয়ানার মুখ থেকে হাসিও হারিয়ে যায়নি। আর এই কারণেই চিকিৎসক থেকে পরিবারের সদস্যরা, সকলেই একবাক্যে বলছেন, ‘জুলিয়ানা একজন সুপারস্টার’।