China threatens Tibetan: ‘নখ’ দিয়ে তিব্বতিদের ভয় দেখায় চিন! বিস্ফোরক তথ্য মিলল রহস্যময় এক ডায়েরিতে
Tibetan Identity: তেনজিংয়ের দাদু ডায়েরিতে লেখেন, আমরা যে তিব্বতি, আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, খাওয়া-পরা যে আলাদা, সেটাই ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল চিনারা
চিন কীভাবে কোনও দেশের ডিএনএ পাল্টে দেয়, তিব্বতই অন্যতম প্রমাণ। কীভাবে তিব্বতের মানুষের উপর দমনপীড়নের মাধ্যম দিয়ে তিব্বতকে হাতের মুঠোয় করেছিল, সেই ইতিহাস আমদের কম-বেশি সবারই জানা। তবে, আরও গভীরে সেই ইতিহাস জানতে গেলে একটি ডায়েরি বলে দেবে আপনাকে চিন কতটা ভয়ঙ্কর ছিল। সেই ডায়েরটি হল তেনজিং ডিকিয়ে নামে তিব্বতির দাদুর। কী লেখা ছিল তাতে?
১৯৫০ সালে লালফৌজ তিব্বত দখল করে। চিনের দাবি, শান্তিপূর্ণভাবেই তিব্বত দেশের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু তিব্বতিদের অভিযোগ চিন শুধু গায়ের জোরেই তিব্বত দখল করেনি। উপরন্তু দখল করার পর তাঁদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এমনকি ধর্মীয় জীবনেও নানাভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। ১৯৫৯ সালে চিনের এই দমনপীড়নের বিরুদ্ধে তিব্বতে শুরু হয় প্রবল বিক্ষোভ। কড়া হাতে আন্দোলন দমন করতে তৎপর হয় কমিউনিস্ট শাসকেরা। বহু মানুষ দলাই লামার উদ্যোগে তিব্বত থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। বহু মানুষের ঠাঁই হয় জেলে। এরপরও তিব্বতিদের উপর নানাভাবে চলে নির্যাতন। বহু তিব্বতিকে জেলের অন্ধ কুঠুরিতে ঢোকানো হয়। এঁদের অনেকেরই আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তেনজিং ডিকিয়ের দাদুও তেমনই একজন। জেলবন্দি মানুষের এমনই যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতার কথা এই বইয়ের ছত্রে ছত্রে। দাদুর লেখা ডায়েরি তেনজিংয়ের হাতে পড়েছিল। সেই ডায়েরি থেকেই লালফৌজের নির্যাতনের ছবিটা ভেসে উঠেছে।
তেনজিংয়ের দাদু ডায়েরিতে লেখেন, আমরা যে তিব্বতি, আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, খাওয়া-পরা যে আলাদা, সেটাই ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল চিনারা। তার জন্য যা যা করা দরকার, সেটাই তারা করে। এমনকি তিব্বতি বন্দিদের মনোবল ভাঙতে সেলে নখের টুকরো ছড়িয়ে রেখে যেত চিনা ফৌজ। নখ তিব্বতিদের কাছে অশুভ সংকেত বয়ে আনে। সংস্কার ভুলিয়ে দিতে সেটাকেই হাতিয়ার করে জেলের নিরাপত্তারক্ষীরা। দলাই লামা অনেক দিন আগেই তিব্বতের স্বাধীনতার দাবি ছেড়েছেন। এখন তাঁর একটাই দাবি, যাই হোক না কেন, তিব্বতের নিজস্ব ঐতিহ্য ও ধর্মীয় সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে। সেখানে যেন চিনা আগ্রাসন না হয়। কিন্তু চিন সেটা হতে দিতে রাজি কি?
কিছুদিন আগে ধর্মশালায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দলাই লামা। তিনি বলেন, ‘চিন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছে। চিনের সঙ্গে কথা বলতে আমি রাজি। চিন এখন বুঝতে পারছে, তিব্বতের লোকেদের আবেগ অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি তৈরি।’ তিব্বতিরা দলাই লামাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি মনে করেন। সেভাবেই ভক্তিশ্রদ্ধা করেন। তেনজিং কিন্তু এই ব্যাপারে আলাদা। বরং সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেছেন, দলাই লামাও ভুল করতে পারেন। চিনকে বিশ্বাস করলে তিব্বতিরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আমরা পৃথিবী থেকে মুছে যাব। তেনজিংয়ের দাবি তাঁর দাদুও সেকথাই বলে গেছেন। তাঁর অভিযোগ, তিব্বত নিয়ে নতুন নতুন খেলা চালিয়েই যাচ্ছে চিন। মুখে যাই বলুক না কেন, ওরা তিব্বতকে কখনই আলাদা সংস্কৃতি নিয়ে থাকতে দেবে না। ভারতের উদ্দেশ্যে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ভুলেও চিনকে বিশ্বাস করবেন না। তাওয়াংয়ের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, কথায় যুক্তি আছে।
