বেজিং: লাক্ষাদ্বীপ (Lakshadweep)নিয়ে বিতর্কের পরই মুখ ফেরাচ্ছে ভারতীয় পর্যটকরা। দেশের পর্যটন নির্ভর অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে চিন(China)-কে বেশি করে পর্যটক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু (Mohamed Muizzu)। এবার চিনও বন্ধুত্বের হাত বাড়াল মলদ্বীপের দিকে। মলদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর প্রথম বেজিং সফরেই সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত করার কথা বললেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping)।
বুধবার চিনের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ অনুষ্ঠানে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে ‘পুরনো বন্ধু’ বলেই ডাকেন জিনপিং। ‘কৌশলগত সমন্বয়ে অংশীদারিত্বের সম্পর্কে’ সম্মতি জানিয়ে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রে আরও বিনিয়োগ করার কথা জানান চিনা প্রেসিডেন্ট।
চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে শি জিনপিং বলেছেন, “চিন ও মলদ্বীপ এক ঐতিহাসিক সুযোগের মুহূর্তে দাড়িয়ে রয়েছে, যা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মলদ্বীপের দেশের সার্বভৌমত্ব্য, স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে”।
অন্যদিকে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টও দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নে চিনের বিশেষ অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। দুই দেশের মধ্যে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মলদ্বীপের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা বলে চিন যে ভারতের সঙ্গে তৈরি হওয়া দূরত্বকেই বোঝাতে চেয়েছেন শি জিনপিং, তা বলাই বাহুল্য। সম্প্রতিই লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর টুইট এবং তারপরই মলদ্বীপের নেতা-মন্ত্রীদের অবমাননাকর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তার ফায়দা তুলতে চাইছে চিন, এমনটাই দাবি কূটনৈতিকদের একাংশের।
যদিও, চিনের সঙ্গে মলদ্বীপের এই বন্ধুত্বকে ভাল চোখে দেখছেন না কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো মলদ্বীপও চিনের ঋণের ফাঁদে পা দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, মলদ্বীপ চিনের কাছ থেকে ১.৩৭ বিলিয়ন বা ১৩৭ কোটি ডলারের ঋণ নিয়েছে। ২০১৪ সালে চিনের বেল্ট অ্য়ান্ড রোড প্রকল্প শুরুর পর বিভিন্ন চিনা সংস্থা মলদ্বীপে আরও ১৩৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। সেই তুলনায় ভারত মলদ্বীপকে মাত্র ১২.৩ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ঋণের দায়ে চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে মলদ্বীপ। কিন্তু পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির দুরাবস্থার উদাহরণ হিসাবে দেখলে, সেখানে দেখা গিয়েছে চড়া সুদে চিনের থেকে ঋণ নিয়ে কীভাবে বিপাকে পড়েছে দেশগুলি। মলদ্বীপও কী সেই দিকেই পা বাড়াচ্ছে?