নয়া দিল্লি: ভারতের (India) সঙ্গে চিনের (China) দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ডোকলামের সংঘাতের পর নতুন করে অশান্তির শুরু গত বছর। লাদাখে (Ladakh) গালোয়ানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের (Galwan Clash) পর আলোচনা হয়েছে অনেক। আপাত দৃষ্টিতে কিছুটা সরেও গিয়েছে চিন। কিন্তু ভারতের সীমান্তে চিন যে শান্তি বজায় রাখতে চায় না, সেটাই প্রমাণিত হল আরও একবার। রাতের অন্ধকারে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (LAC) একেবারে কাছ ঘেঁষে চলল চিনের যুদ্ধ মহড়া (Battle drill)। চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় সেই মহড়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। রাতের অন্ধকারে কী ভাবে যুদ্ধ হবে, সেই মহড়াই নাকি দিয়েছে চিন (China)।
চিনের সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনযায়ী, চিনের সেনাবাহিনীর থিয়েটার কমান্ড জিনজিয়াং প্রদেশে এই মহড়া চালিয়েছে। জানা যায়, ভারতের সীমান্ত লাগোয়া এলাকার দায়িত্বে রয়েছে চিনের এই থিয়েটার কমান্ড। চিনের সংবাদমাধ্যমের দাবি, নতুন অস্ত্রের সঙ্গে সেনাবাহিনীকে পরিচিত করাতেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। ওই রিপোর্টেই দাবি, ভারতের সীমান্ত লাগোয়া ওই এলাকায় ১৬ ফুট উচ্চতায় চিনের একাধিক বাহিনী এই ধরনের মহড়া চালাচ্ছে।
থিয়েটার কমান্ডের কমান্ডার ইয়াং ইয়াং জানান, উচ্চ পার্বত্য এলাকার যুদ্ধক্ষেত্রে কী ভাবে চলতে হয়, প্রতিকথল পরিস্থিতিরে কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, সেটা শেখানোই মূল উদ্দেশ্য। তাই কোনও আলো ছাড়া ওই এলাকায় মহড়া চালানো হচ্ছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারেও কী ভাবে বন্দুক, কামান ব্যবহার করতে হবে, সেই মহড়াই দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চিন ওই এলাকায় রকেট লঞ্চার স্থাপন করেছে বলেও জানা গিয়েছে। গত বছরের সংঘর্ষের পর থেকে এলএসি ঘেঁষা ওই এলাকায় ক্রমশ নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছে চিন। পিছিয়ে নেই ভারতও। চিন সীমান্তের দিকে নজর রেখে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ভারত।
ইতিমধ্যেই অবশ্য একটু একটু করে বরফ গলতে শুরু করেছে লাদাখে। এখনও সংঘাতের সম্পূর্ণ ইতি না হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার একের পর এক অংশ থেকে সরে গিয়েছে দুই দেশের সেনাবাহিনী। কিছুদিন আগেই গোগরা হাইটস থেকে সরে গিয়েছে দুই দেশের বাহিনী। চলতি বছরের ৩১ জুলাই দুই দেশের বৈঠকে ভারত ও চিনের মধ্যে এই গোগরা হাইটস নিয়ে কথা হয়। গত ৩১ জুলাই লাদাখ নিয়ে কমান্ডার স্তরের দ্বাদশ বৈঠক হয় চুসুল-মলদো সীমান্তে। আর সেই বৈঠকে PP17A অর্থাৎ গোগরা থেকে সেনা সরাতে রাজি হয় চিন। এরপরই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে PP15 পয়েন্ট অর্থাৎ হট স্প্রিং থেকে সেনা সরাতে রাজি নয় তারা। জুলাইতেই সীমান্ত সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে কথা হয় ভারত-চিনের। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক হয় দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর। তাজিকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়ঙ্কর ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। দুই দেশের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক করার ক্ষেত্রে সায় দেন তাঁরা দু’জনেই।
আরও পড়ুন: Afghanistan crisis: আফগান উদ্বাস্তুদের সহায়তার প্রয়োজন, জানালেন তালিবান মন্ত্রী