India-Nepal: ভারত-নেপাল সম্পর্কে চিনের বিষ, G20 সম্মেলনের আগে সক্রিয় ‘নেকড়ে যোদ্ধা’রা

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Sep 06, 2023 | 2:19 PM

India-Nepal relation: তাঁর মতে, ভারতের মতো প্রতিবেশী পাওয়াটা 'নেপালের দুর্ভাগ্য'। কারণ, প্রতিবেশী দেশগুলি সম্পর্কে ভারতের নীতি মোটেই বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। তিনি আরও দাবি করেন, অর্থনৈতিক বিষয়ে শিক্ষা নেওয়ার জন্য কাঠমান্ডুর উচিত চিনের দিকে তাকানো।

India-Nepal: ভারত-নেপাল সম্পর্কে চিনের বিষ, G20 সম্মেলনের আগে সক্রিয় নেকড়ে যোদ্ধারা
প্রতীকী ছবি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কাঠমান্ডু: জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে ফের ভারতকে আক্রমণ! নেপালে দাঁড়িয়ে বিতর্কিত মন্তব্য নেপালে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতের। আপাতদৃষ্টিতে তিনি চিনের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর কথা বলছিলেন। আর সেই প্রসঙ্গেই ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের সমালোচনা করেন চিনা রাষ্ট্রদূত চেন সং। তাঁর মতে, ভারতের মতো প্রতিবেশী পাওয়াটা ‘নেপালের দুর্ভাগ্য’। কারণ, প্রতিবেশী দেশগুলি সম্পর্কে ভারতের নীতি মোটেই বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। তিনি আরও দাবি করেন, অর্থনৈতিক বিষয়ে শিক্ষা নেওয়ার জন্য কাঠমান্ডুর উচিত চিনের দিকে তাকানো।

কাঠমান্ডুর বানেশ্বর এলাকার এক হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন চেন সং। নেপাল সংসদের অধ্যক্ষ দেবরাজ ঘিমিরে-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের বিষয়ে চেন সংবলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, আপনাদের ভারতের মতো এক প্রতিবেশী রয়েছে। ভারত এক বিশাল বাজার, বিশাল সম্ভাবনা। আপনারা তা ব্যবহার করতেই পারেন৷ কিন্তু একই সঙ্গে, নেপাল এবং অন্যান্য প্রতিবেশীদের প্রতি ভারতের নীতি তেমন বন্ধুত্বপূর্ণ নয় এবং নয়। নেপালের জন্য বিশেষ লাভজনক নয়।”

ভারতের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চিনা রাষ্ট্রদূত। চেন সং বলেন, “গত আর্থিক বছরে, আপনারা ভারতে ১০,০০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ রফতানি করেছেন। বদলে, ভারত থেকে কত আমদানি হয়েছে আপনাদের? নেপালি বন্ধুরা, আপনারা ভারত থেকে ১৯,০০০ কোটি নেপালি টাকার বিদ্যুৎ আমদানি করেছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয় গর্ব করেন আপনারা। অথচ, আপনাদের বিদ্যুৎ বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে। এরপরও কি আপনারা মনে করেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আপনাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেবে?”

চিনা রাষ্ট্রদূত নেপালি জনগণের সামনে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গির নেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছেন। তিনি বলেছেন, নেপালের উচিত কৃষিক্ষেত্রে শক্তিশালী হওয়ার দিকে মন দেওয়া। চিন ও নেপালের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি সম্পর্কে তিন বলেন, “নেপালের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে এবং চিন ও নেপালের মধ্যে আরও সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রের অনুসন্ধান করতে, আমি আরও বেশি করে মানুষের মধ্যে যাব। আমি চাই এবং আমি মনে করি, নেপালের মানুষের আরও সমৃদ্ধ জীবন, আরও আধুনিক জীবন উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।”


স্বাভাবিকভাবেই জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগে, চেনের এই মন্তব্য কুটনৈতিক স্তরে বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ঐতিহাসিক সময় থেকে ভারতের সঙ্গে দৃঢ় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে নেপালের। সম্প্রতি, তার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানোরও চষ্টা চলছে দুই পক্ষ থেকেই। তবে, গত কয়েক বছর ধরে চিনও ক্রমে নেপালে তার প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা করে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো নেপালকেও তার বাজারে পরিণত করতে চাইছে বেজিং।

তবে এর আগে, নেপালে দাঁড়িয়ে কোনও চিনা রাষ্ট্রদূতকে সরাসরি ভারতের সমালোচনা করতে দেখা যায়নি। কুটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, সম্ভবত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে ‘উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লোমেসি’ বা ‘নেকড়ে যোদ্ধা কূটনীতি’ গ্রহণ করেছে বেজিং। ‘উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লোমেসি’ হল একটি দমনমূলক কূটনৈতিক শৈলি। শি জিনপিং প্রশাসনের সময় চিনা কূটনীতিকদের প্রায়শই এই নীতির প্রয়োগ করতে দেখা যায়। শব্দবন্ধটি এসেছে চিনা অ্যাকশন ফিল্ম ‘উলফ ওয়ারিয়র’ থেকে। এই নীতিতে, চিন সরকার, চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কোনওরকম সমালোচনা সহ্য় করা হয় না। যে কোনও ভাবে বিরুদ্ধ প্রচার দমন করা হয়। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিতর্কিত চিনা মানচিত্র প্রকাশ, চিনা রাষ্ট্রদূতের বিতর্কিত মন্তব্য – এই নীতির অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে। সরকারিভাবে বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়েছিল নয়া দিল্লি। চেন সং-এর মন্তব্যের প্রেক্ষিতেও কি সেই ধরনের কোনও পদক্ষেপ করা হবে?

Next Article