Chinese Submarine: ট্রাম্পের হুমকির জবাব? চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাবমেরিন ধ্বংসের মহড়া শুরু রুশ নৌসেনার
Chinese Submarine: মার্কিন হুমকির পরই তড়িঘড়ি টনক নড়ল? ট্রাম্প বিরোধী দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র হাত মিলিয়ে শুরু করল যৌথ মহড়া। মহড়ার লক্ষ্যও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সাবমেরিন ধ্বংস করা। ট্রাম্পের সাবমেরিন পাঠানোর হুমকির পরপরই মহড়াকে কেন্দ্র করে দুনিয়াজুড়ে চাঞ্চল্য।

মস্কো: দিন দুই আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াতে দুটি পরমাণু সাবমেরিন পাঠানোর হুমকি দেন। সোমবার আবার বলেন, যথাস্থানে মোতায়েন হয়ে গেছে মার্কিন সাবমেরিন। এবার কি তারই পাল্টা দিল রাশিয়া? আর এক পরমাণু শক্তিধর চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাপান সাগরের কাছে যৌথ মহড়া শুরু করে দিল রাশিয়া। রুশ ও চিনা নৌসেনা একযোগে সমুদ্রপথে হামলা, সাবমেরিন ধ্বংসের মহড়া চালাতে শুরু করে দিল রবিবার থেকে। ৩ দিনের এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয়েন্ট সি-২০২৫ এক্সারসাইজ’।
রুশ বন্দর ভ্লাদিভভস্তকের কাছে সমুদ্রপথে দুই দেশের নৌসেনার যৌথ মহড়া আন্তর্জাতিক মহলে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কারণটা মহড়া শুরু সময়। সম্প্রতি মার্কিন বিরোধী সবচেয়ে বড় দুই শক্তি রুশ ও চিন কাছাকাছি এসেছে। পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাহ্য করে চিন তাদের বাণিজ্যিক সমঝোতা ক্রমশ মজবুত করেছে মস্কোর সঙ্গে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকেই রাশিয়ার উপরে খেপে রয়েছেন ট্রাম্প-সহ ন্যাটো রাষ্ট্রগুলি। অবিলম্বে ইউক্রেনে আগ্রাসন না থামালে রাশিয়ার উপরে অতিরিক্তি শুল্ক-সহ একগুচ্ছ বিধিনিষেধ চাপানোর হুমকি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনকী রুশ হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনকে মার্কিন ‘প্যাট্রিয়ট’ মিসাইল পাঠাবেন বলেও আগাম জানিয়ে রেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও চিন একযোগে সমুদ্রপথে নৌমহড়া শুরু করায় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা অশনি সঙ্কেত দেখছেন। রুশ সেনার তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই মহড়া অন্য দেশের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করতে নয়, শুধুমাত্র আত্মরক্ষায়। মহড়া শেষে দুই দেশের নৌসেনাই যৌথ নজরদারি চালাবে প্যাসিফিকে।

মহড়ায় দুই দেশেরই সর্বাধুনিক নৌবহর অংশ নিয়েছে। কীভাবে সাবমেরিন ধ্বংস করা যায়, কীভাবে ডুবন্ত সাবমেরিন থেকে আটকে পড়া নৌসেনাদের উদ্ধার করা যায়, রণতরী থেকে মিসাইল ছুড়ে শত্রুর জাহাজ ধ্বংস করা যাবে- তিনদিনের এই মহড়ায় হাতেকলমে করে দেখাচ্ছে দু দেশের নৌসেনা। চিনা বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চারটি চিনা রণতরী, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ‘শাওসিং’ ও ‘উরুমকি’ এই মহড়ায় রুশ নৌসেনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। সিএনএস শাওসিং ১৩৪ চিনা নৌসেনাকে নেতৃত্ব দেবে। মহড়ার জন্য এই প্রথমবার চিনা সাবমেরিন রুশ জলসীমায় প্রবেশ করেছে। রুশ বন্দরে নোঙর ফেলেছে চিনের ‘গ্রেট ওয়াল ২১০’। অন্যদিকে রুশ নৌসেনার ডেস্ট্রয়ার আরএফএ অ্যাডমিরাল ট্রিবিউট ৫৬৪ এই মহড়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে রুশ কর্ভেট আরএফএস গ্রমকি, সাবমেরিন আরএফএস ভলকভ ও ইগর-এর মতো উদ্ধারকারী জাহাজ।
ভলকভ ও ‘গ্রেট ওয়াল ২১০’ দুটোই আধুনিক কিলো ক্লাস সাবমেরিন। পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি (PLAN)-র কাছে এরকম কিলো ক্লাসের ১০টি সাবমেরিন ও রুশ নেভি ১২টি সাবমেরিন রয়েছে। চিন-রাশিয়া যৌথ মহড়াকে ভাল চোখে দেখছে না জাপান। তাদের অভিযোগ, জাপানকে ভয় দেখাতেই তাদের সমুদ্রপথের কাছে এই মহড়া চালানো হচ্ছে। জাপান এর আগেও অভিযোগ করেছিল, চিনা ‘ডাকাই’ ক্লাসের সাবমেরিন জাপানের জলসীমায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। যদিও চিনা নৌসেনা জানিয়েছে, কাউকে ভয় দেখানো তাদের উদ্দেশ্য নয়। চিন ও রাশিয়ার মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সম্মান জানাতে এই মহড়া পূর্ব নির্ধারিত-ই ছিল। এই নিয়ে দুই দেশ ষষ্ঠবার একসঙ্গে মহড়া দিচ্ছে জলপথে। চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র কর্নেল ঝ্যাং শাওগ্যাং জানিয়েছেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সঙ্গে এই মহড়ার কোনও যোগ নেই। এটা দুই দেশের বার্ষিক যৌথ মহড়া। ২০২১ থেকেই দুই দেশ নিয়ম করে এই মহড়া চালায়। গতবছর এই মহড়া হয় চিন সাগরে। মহড়াতে রণতরীর সঙ্গেই রয়েছে বোমারু বিমান-ও।

