পঞ্জশীর: চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না তালিবান। পঞ্জশীরের সঙ্গে গোটা বিশ্বের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তবুও বাগ মানছে না পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনী। আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে বুধবারও তালিবান বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম টোলো নিউজের তরফে জানানো হয়েছে, বিগত দুই দিন ধরে তালিবান পঞ্জশীর দখলের প্রাণপম চেষ্টা করছে। উল্টোদিকে, প্রতিরোধ বাহিনীও একচুল জমি ছাড়তে নারাজ। দুই পক্ষের মধ্যেই ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই সদস্য়দের প্রাণহানিও হয়েছে।
তালিবানের তরফে দাবি করা হয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। পঞ্জশীরে তারা লাগাতার হামলা চালাচ্ছে। প্রতিরোধ বাহিনীর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য আনামুল্লাহ সামানগানি বলেন, “পঞ্জশীরে ইসলামিক এমিরেটসের মুজাহিদ্দিন বাহিনীর উপর হামলা চালানো হয়েছে। মুজাহিদ্দিন বাহিনীও পাল্টা জবাব দিয়েছে এবং প্রতিরোদ বাহিনীর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে।”
তালিবান নেতা আমির খান মুত্তাকি জানান, পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসলেও, তা ব্যর্থ হয়েছে। তবে এখনও তালিবান যাবতীয় সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে চায়।
উল্টোদিকেই পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনী বা নর্দান অ্যালায়েন্সের তরফে দাবি, তারা নয়, তালিবানই প্রথম হামলা চালিয়েছিল। তারা কেবল সেই হামলার প্রতিরোধ করেছে এবং তালিবানকে ফের পঞ্জশীরের সীমানার বাইরেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিবান বাহিনীর বহু সদস্যের প্রাণহানিও হয়েছে।
So far from battle of Khavak last night, taliban has 350 casualties, more than 40 captured & prisoned. NRF got many new American vehicles, weapons & ammunitions as a trophy. Commanded Defense of Khavak,Commander Munib Amiri ??#AhmadMassoud #Taliban #Panjshir #secondresistance pic.twitter.com/nSlFN47xL2
— Northern Alliance ?? (@NA2NRF) September 1, 2021
প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র ফহিম দাস্তি বলেন, “বিগত ৪০ ঘণ্টায় তালিবান বাঘলানের আন্দারাব উপত্যকা থেকে খোয়াক অঞ্চলের উপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের তরফ থেকেও স্থানীয় বাহিনীরা তালিব বাহিনীকে পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে। আফগান বাহিনীও আমাদের সাহায্য় করেছে। প্রতিরোধ বাহিনীর সামনে টিকতেও পারেনি তালিবান বাহিনী। তাদের কমপক্ষে ১১৫ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০০ জন আহত হয়েছে। ৫৫জনকে আটক করেছি আমরা।”
যদিও তালিবানের তরফে এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে এবং মাসুদ বাহিনীর হামলার কেবল জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তাদের তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই দাবি।
এদিকে পঞ্জশীরের বাইরেই নাসাজি-গুলবাহার অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে এবং বুধবার অবধি তা চলেছে। গোলাগুলি চলায় অধিকাংশ বাসিন্দাই ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই পঞ্জশীরের পারওয়ান প্রদেশ, খোয়াক পঞ্জশীর ও আন্দারাব জেলায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। মাসুদ বাহিনী জানিয়েছে, কমপক্ষে ৩৫০ জন তালিবানের মৃত্যু হয়েছে। ৪০ জনেরও বেশি তালিবানকে আটক করে বন্দি বানানো হয়েছে।
উল্টোদিকে, প্রতিরোধ বাহিনী তাদের সাফল্যের যাবতীয় আপডেট সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয় বলে খাবার, জল সরবরাহের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আরও পড়ুন: কাতার থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা, বিমানবন্দর সচল করতে উদ্যোগী তালিবান, জারি বিজয় উৎসবও!